শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ইন্ধন দেয়ার অভিযোগ: বিএনপি নেতার অডিও ভাইরাল

0

সিটিনিউজ ডেস্ক:: নিরাপদ সড়কের দবিতে ছাত্রদের আন্দোলনে বিএনপি সুযোগ নিতে চাইছে, নাশকতার পরিকল্পনা করছে-সরকার দলেল পক্ষ থেকে এমন অভিযোগের মধ্যে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে একটি মোবাইল ফোনের কথোপকথন প্রকাশ হয়েছে। এই কথোপকথন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর সঙ্গে নওমি নামে এক তরুণ যিনি বিএনপি নেতাকে আঙ্কেল ডাকছিলেন।

ওই কথোপকথন অনুযায়ী নওমি ফোন করেছিলেন কুমিল্লা থেকে। বিএনপি নেতা বলে সন্দেহভাজন কণ্ঠটি তাকে ঢাকায় এসে দুই, চারশ, পাঁচশ জন মিলে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যোগ দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

কথোপকথন অনুযায়ী নওমি রাজনীতিতে পরিচিত মুখ না, এবং এই সুযোগটা নেয়ার কথা বলা হয়েছে। আর বেশি দেরি করলে সুযোগটা হাতছাড়া হয়ে যাবে বলেও সতর্ক করা হয়েছে।

তবে এই কথোপকথনটি সত্যিই আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর কি না, সেটি যাচাই করা সম্ভব হয়নি। এ বিষযে বিএনপি নেতার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি কল ধরেননি।

গত ২৯ জুলাই ঢাকার বিমানবন্দর সড়কে বাস চাপায় দুই কলেজ শিক্ষার্থীর মৃত্যুর জেরে পরদিন থেকে নিরাপদ সড়কের দাবিতে ঢাকায় রাস্তায় নামে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা। টানা ছয় দিন ধরে তারা রাস্তায় অবস্থান নিয়ে রাখছে দিনভর আর তাদের কারণে নগর জীবনে স্থবিরতা নেমে এসেছে।

আবার শিক্ষার্থীরা ৩১৭টি গাড়ি ভাঙচুর এবং আটটিতে আগুন দিয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। এর প্রতিক্রিয়ায় আবার নিরাপত্তাহীনতার কথা বলে শুক্রবার থেকে সারাদেশে বাস চালানো বন্ধ করে দিয়েছে মালিক শ্রমিকরা। দুইয়ে মিলে পরিস্থিতি পুরো ঘোলাটে হয়ে যাচ্ছে।

এর মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে এই আন্দোলন নিয়ে ছাত্রদল-শিবিরের চক্রান্তের বিষয়টি নিয়ে বারবার সতর্ক করা হচ্ছে। বিভিন্ন এলাকায় ছাত্রদের পোশাক পরে অছাত্রদের রাস্তায় নেমে গোলযোগ করার খবরও আসছে। আবার স্কুলড্রেস বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, বছরের এই সময়ে এই পোশাকের কোনো চাহিদা না থাকলেও হঠাৎ চাহিদা তুঙ্গে উঠেছে এবং তারা নিজেরাও অবাক হয়েছেন।

এর মধ্যে সামাজিক মাধ্যমে এক আন্দোলনকারীকে তুলে নেয়া, একটি স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৪২ জন ছাত্রকে টিসি দেয়া, ছয় বছর পুরনো নানা ছবি প্রকাশ করে ছাত্রদের ওপর হামলা, নির্যাতনের গুজব ছড়ানো হয়েছে। শনিবার এক ছাত্রের রগ কেটে দেয়ার গুজব ছড়িয়ে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলার ইন্ধন দেয়া হয়েছে। আর কয়েকশ ছাত্রের সঙ্গে ইউনিফর্ম নেই এমন তরুণেরও এই হামলায় অংশগ্রহণ করতে দেখা গেছে।

এই পরিস্থিতিতে ফেসবুকে বাইরাল হয়েছে এই মোবাইল কথোপকথনটি। এর আগে ২৬ জুন গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটের আগে এমনই একটি কথোপকথন প্রকাশ হয়েছিল যা বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক সেনা কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের সঙ্গে এক যুবদল নেতার বলে জানিয়েছে পুলিশ।

ওই কথোপকথন অনুযায়ী বিএনপি নেতা নৌকার ব্যাচ পরে ভোটকেন্দ্রে গোলযোগ করতে নির্দেশনা দিচ্ছিলেন আর তিনি নিজে এর জন্য প্রশিক্ষণ ও ‘যন্ত্রপাতি’ দেবেন বলে জানিয়েছিলেন।

আবার রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটের প্রচারের সময় ১৭ জুলাই সেখানে বিএনপির পথসভায় বোমা বিস্ফোরণের পরও একটি কথোপকথন প্রকাশ হয় যা বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু ও রাজশাহী জেলার সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান মন্টুর মধ্যে ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।

ওই কথোপকথন অনুযায়ী মিণ্টু জানান, ভাইয়ার (তারেক রহমান) কাছ থেকে ক্রেডিট নিতে তারা নিজেরা এই বোমা হামলা চালিয়েছেন।

তবে দুইবারও বিএনপির পক্ষ থেকে এসব রেকর্ডকে বানোয়াট দাবি করা হয়েছে। বলা হয়েছে, প্রযুক্তির যুগে এগুলো বানানো কোনো ব্যাপার না।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.