সরকারের পাশাপাশি এনজিওসমূহ রোহিঙ্গা মানবিক সহায়তায় ভূমিকা রাখছে

0

সিটিনিউজ ডেস্ক:: মানবিক বিপর্যয়ের শিকার জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের এদেশে অস্থায়ীভাবে আশ্রয় দিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিশ্ব মানবতার প্রতীক হিসেবে সারা বিশ্বে সুনাম অর্জন করেছেন। বিশ্ব বাংলাদেশকে জেনেছে মানবতাবাদী দেশ হিসেবে। এ মানবিক সহায়তার জন্য বিশ্ববাসী বাংলাদেশকে এবং বাংলাদেশী জনগণকে সম্মান করছে।

বাংলাদেশ সরকার কক্সবাাজার জেলার উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায় আশ্রয় নেওয়া জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের সঠিকভাবে প্রত্যাবাসনের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ সরকার তাঁদের মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা প্রদান করছে। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা বা এনজিওসমূহ রোহিঙ্গা মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অতিরিক্ত সচিব জনাব মোহাম্মদ আবুল কালাম এনডিসি গত ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ তারিখে স্থায়ীত্বশীল উন্নয়নের জন্য সংগঠন ইপসা কর্তৃক বাস্তবায়িত জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের মানবিক সহায়তার জন্য রোহিঙ্গা ক্রাইসিস রেসপন্স প্রোগ্রাম পরিদর্শনকালে উপরোক্ত মতামত প্রদান করেন।

ইপসা গত বছরের ২৫ আগষ্ট, ২০১৭ তারিখের পর থেকে রোহিঙ্গা মানবিক সহায়তা কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে আসছে। স্থায়ীত্বশীল উন্নয়নের জন্য সংগঠন ইপসা শুরু থেকেই মানবিক সহায়তা কার্যক্রমের আওতায় রোহিঙ্গা ক্রাইসিস রেসপন্স প্রোগ্রামের অধীনে জাতিসংঘের বিভিন্ন এজেন্সি বিশেষ করে বিশ্ব খাদ্য কর্মসুচি-ডাব্লিউএফপি, ইউনিসেফ, আইওএম, ইউএনউইমেন, ইউএনএফপিএ এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা এ্যাকশনএইড, হেল্পএইজ ইন্টারন্যাশনাল , কনসার্ন ওয়াল্ডওয়াইড, সেভ দ্যা চিলড্রেন, অক্সফ্যাম, কেয়ার ’র সহযোগিতায় জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের কল্যানের জন্য বিভিন্ন উন্নয়ন ও মানবিক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে আসছে। ইপসা ডাব্লিউএফপি ও সেভ দ্যা চিলড্রেন’র সহযোগিতায় প্রায় ৪৭ হাজার রোহিঙ্গা পরিবারের মাঝে খাদ্য সহায়তা প্রদান করছে।

এ্যাকশনএইড ও ইউএনউইমেন’র সহযোগিতায় ২টি নারী বান্ধব কেন্দ্র ও মাল্টিপারপাস উইমেন সেন্টার পরিচালনা করছে, যার আওতায় নারীদের সেলাই প্রশিক্ষণ প্রদান, পরিবেশবান্ধব জ্বালানী উপকরণ প্রদান, স্ট্রীটলাইট স্থাপন, গভীর নলকূপ, নারীদের জন্য গোসলখানা এবং ল্যাট্রিন স্থাপন, হেল্পএইজ ইন্টারন্যাশনাল’র সহযোগিতায় প্রবীণদের জন্য প্রবীণবান্ধব কেন্দ্র স্থাপন এবং এর আওতায় প্রবীণদের চিকিৎসা সেবা প্রদান ও প্রবীণবান্ধব উপকরণ বিতরণ পাশাপাশি পালংখালী ইউনিয়নের স্থানীয় প্রবীণদের জন্য প্রবীণবান্ধব কেন্দ্র স্থাপন ও প্রবীণবান্ধব উপকরণ বিতরণ ও স্থানীয়দের স্বাস্থ্য সেবা প্রদান, ইউনিসেফ’র সহযোগিতায় এডোলেসেন্ট ফ্রেন্ডলি স্পেস স্থাপন এবং শিশু-কিশোরদের মনো-সামাজিক বিকাশের জন্য কার্যক্রম বাস্তবায়ন, সেভ দ্যা চিলড্রেন’র সহযোগিতায় শিশুর শিক্ষা ও খেলাধূলার জন্য ১শ টি চাইল্ড প্লে কর্ণার স্থাপন, কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইড’র সহযোগিতায় ডিগনিটি কিট বিতরণ ও স্থানীয় এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান কার্যক্রম, অক্সফ্যাম’র সহযোগিতায় স্থানীয়দের বিকল্প জীবিকায়ন কার্যক্রম, আইওএম’র সহযোগিতায় মানবপাচার প্রতিরোধ কার্যক্রম এবং কেয়ার’র সহযোগিতায় রোহিঙ্গা নারীদের জেন্ডার বৈষম্য প্রতিরোধ প্রকল্প বাস্তবায়ন করে আসছে। শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার ইপসা’র কার্যক্রমসমূহের উপস্থাপনা আগ্রহ নিয়ে শুনেন এবং পরিদর্শনে কার্যক্রমসমূহের ভূয়শী প্রশংসা করেন। তিনি ইপসা’র প্রবীণ বিষয়ক কার্যক্রমসহ অন্যান্য মানবিক কার্যক্রমসমূহ সবগুলো ক্যাম্পে বাস্তবায়নের জন্য অনুরোধ করেন এবং এগুলো বাস্তবায়নে সর্বাতœক সহযোগিতায় আশ্বাস প্রদান করেন। তিনি পালংখালী ইউনিয়নের থ্যাংখালী গ্রামের ১৩ ক্যাম্পে স্থাপিত প্রবীণ বান্ধব কেন্দ্রে প্রবীণবান্ধব উপকরণ বিতরণ করেন।

এসময় ১৩ নম্বর ক্যাম্পের ক্যাম্প-ইন-চার্জ (সিআইসি) মো: আবদুল ওয়াহাব রাশেদ, ইপসা’র প্রধান নির্বাহী মো: আরিফুর রহমান, পরিচালক (অর্থ) পলাশ চৌধুরী, সহকারি পরিচালক মেহাম্মদ শহিদুল ইপসলাম, হেলপএইজ ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ’র এডভোকেসী অফিসার মোহাম্মদ ফারুক আহমেদ, রোহিঙ্গা ক্রাইসিস রেসপন্স প্রোগ্রামের সমন্বয়কারী জিশু বড়–য়া, প্রশিক্ষণ বিভাগের শাহ সুলতান শামীম, ইপসা-হেলপএইজ প্রকল্পের পিসি জাহাঙ্গীর আলম উপস্থিত ছিলেন।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.