সাতকানিয়ার জনপদে সাংবাদিক আবু সুফিয়ান

0

জুবায়ের সিদ্দিকী : ছিলেন এক সময়ের তুখোড় ছাত্রলীগ নেতা। সংগঠনের দু:সময়ে সাহসের সঙ্গে নেতৃত্ব দিয়েছেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের। স্বৈরাচারী সরকারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে ছিলেন আন্দোলন সংগ্রামে। সাংবাদিকতা পেশায় এসেও প্রতি মুহুর্তে হৃদয়ে লালন করেছেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ। মেধাবী এই সাবেক ছাত্রনেতা একাধিকবার নেতৃত্ব দিয়েছেন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের। তিনি সাংবাদিক সমাজের অভিভাবক, প্রগতিশীল ছাত্র রাজনীতির পথনির্দেশ ও আওয়ামী লীগ নেতা আবু সুফিয়ান। ছাত্র জীবন থেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের ঝান্ডা হাতে পথ চলেছেন বিরামহীন। স্বৈরশাকদের চোখ রাঙানী, হুমকি-ষড়যন্ত্র ও বাধা, প্রতিকুলতাকে পেছনে ফেলে তিনি সম্মুখে এগিয়ে গেছেন।

আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে রাজপথে, মিছিল, মিটিং’এ বছরের পর বছর অগ্রণী ভুমিকা রেখেছেন তিনি। কোন ভয়ভীতি তাকে আদর্শচ্যুত করতে পারেনি। এক সময়ের জামায়াত অধ্যুষিত জনপদ সাতকানিয়া-লোহাগাড়ায় তিনি নির্ভয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের। এখনো দলকে সুসংগঠিত করতে, সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড ও জনহিতকর কার্যক্রমের তথ্য তৃনমুলের জনগোষ্ঠির কাছে পৌছাতে তিনি নিরলসভাবে কাজ করছেন। স্বচ্চ রাজনীতিবিদ আবু সুফিয়ান উন্নয়ন ও গনমুখী রাজনীতির অনন্য এক উদাহরন। আবু সুফিয়ান রাজনীতির পাশাপাশি সাংবাদিকতা পেশায় নিয়োজিত। সেখানেও নিজের মেধা, শ্রম ও যোগ্যতার সমন্বয়ে দিয়েছেন সর্বোচ্চ নেতৃত্ব।

আবু সুফিয়ান ১৯৫৭ সালের ১ জানুয়ারী চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার ঢেমশা ই্উনিয়নের সম্ভ্রান্ত এক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। তার পিতার নাম মরহুম আব্দুছ ছালাম, মাতা মরহুমা পেয়ারজান বেগম। ছাত্রজীবন কেটেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবস্থাপনায় স্নাতক (অনার্স) ও মার্কেটিং’এ স্নাতকোত্তর (এম.কম) করেছেন। সাংবাদিক সমাজের নেতৃত্বে দিয়েছেন দীর্ঘদিন। তিনি ১৯৯১-৯২ এবং ১৯৯৩-৯৪ সালে দুইবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক এবং ১৯৯৭-৯৮, ১৯৯৯-২০০০, ২০০৩-০৪, ২০০৫-০৬, ২০০৮-০৯ এবং ২০১১-১২ সাল পর্যন্ত ৬ বার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। দক্ষতার সাথে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও পরিচালনা করে আসছেন। বর্তমানে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ঢেমশা উচ্চ বিদ্যালয় ও সাতকানিয়া ইছামতি মোহাম্মদীয়া আদর্শ দাখিল মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।

এ ছাড়া নগরীর এম ই এস কলেজ এবং আলহাজ্ব মোস্তফা হাকিম ডিগ্রী কলেজেরও ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ছিলেন তিনি। চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত শীর্ষস্থানীয় সংবাদ ’সাপ্তাহিক চট্টলা’র প্রধান সম্পাদক ও মিডিয়া- প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান মাসলিংক মিডিয়া সার্ভিসেস’এর চেয়ারম্যান তিনি। এর আগে ১৯৭৬ সাল থেকে ১৫ বছর ধরে ছিলেন চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত দৈনিক পুর্বতারা’ পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক ছিলেন।

ছাত্রজীবনেও ছাত্রলীগের নানা পর্যায়ের নেতৃত্বে ছিলেন তিনি। সাতকানিয়া সরকারী কলেজে অধ্যায়নরত অবস্থায় ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক হন। মেধা-দক্ষতা ও নেতৃত্বের গুনে তিনি চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্য হন। পরবর্তীতে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক হন। বর্তমানে তিনি দক্ষিন জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির অন্যতম সদস্য। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফল সঙ্গী হিসেবে তিনি বিভিন্ন দেশ সফর করেছেন।

রাষ্ট্রীয় প্রতিনিধি হিসেবে ২০০০ সালের সেপ্টেম্বরে আমেরিকা, ২০১০ সালের মার্চে চীন এবং ২০১৭ সালের মার্চে ইন্দোনেশিয়া সফর করেছেন। চীন সফর শেষে আসার পর মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাফল্য ও দক্ষ নেতৃত্বের বিস্তারিত তুলে ধরে ’ইতিহাসের প্রেক্ষপটে সাম্প্রতিক চীন’ শিরোনামে একটি পুস্তক প্রকাশনা করেন। এ ছাড়া তিনি ব্যক্তিগতভাবে বিভিন্ন সময় থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, সৌদিআরব, যুক্তরাজ্য, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ভারত সফর করেন। তার পরিবারও আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত।

তার বড়ভাই মরহুম শামসুল ইসলাম চট্টগ্রামের গাছবাড়িয়া সরকারী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ এবং অবিভক্ত ঢেমশা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্টাতা সভাপতি ও প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ছিলেন। স্বাধীনতা ও পরবর্তী সময়ে তিনি মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগের পাশে থেকে সাহস জুগিয়েছিলেন। আরেক ভাই মরহুম আবুল কালাম সরাসরি অংশগ্রহন করেন মহান মুক্তিযুদ্ধে। তিনি দীর্ঘদিন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, সাতকানিয়া উপজেলার কমান্ডার ছিলেন।

আবু সুফিয়ান রাষ্ট্রায়ত্ত রূপালী ব্যাংক লিমিটেডে ২০১৩ সাল থেকে পর-পর দুইবার পরিচালক হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন। বর্তমানেও দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করছেন। ব্যাংকের সাবমিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান রূপালী সিকিউরিটিজ লিমিটেডের পরিচালক ছিলেন ২০১৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৭ সালের এপ্রিল পর্যন্ত। এ ছাড়া আছেন রূপালী ব্যাংক লিমিটেড ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য হিসেবেও। নেতৃত্বের দক্ষতায় ও আওয়ামী লীগের পরীক্ষিত নেতা আবু সুফিয়ান ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারীর দশম সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনে আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য পদে মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন।

বর্তমানে সাতকানিয়া-লোহাগাড়ায় জনগনের কাছে, আওয়ামী লীগের উন্নয়নের বার্তা পৌঁছে দিচ্ছেন তারুন্যের অহঙ্কার ও বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক আবু সুফিয়ান। তিনি তৃনমুলের জনগোষ্ঠিকে জানান দিচ্ছেন,’ আওয়ামী লীগ দেশের উন্নয়ন করে, মর্যাদা বাড়ায়, বিপরীতে বিএনপি নিজেদের ভাগ্যোন্নয়নে ব্যস্ত থাকে। দেশকে ভিক্ষুকের জাতী হিসাবে উপস্থাপন করে। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে এ ধেমের অভাবনীয় উন্নয়ন হয়েছে, দেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। এ সরকারের আমলে জনগনের আয় এবং জীবনযাত্রার মান বেড়েছে, বিপরীতে বিএনপির সময় ছিল হাহাকার। জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস জনজীবনে ছিল অস্থির, আকন্ঠ দুর্নীতিতে নিমর্জ্জিত ছিল দেশ।

বিএনপি আন্দোলনের নামে পেট্রোলবোমা ও আগুন দিয়ে নাগরিকদের পুড়িয়ে মেরেছেন। সহিংসতা, অরাজকতা ও নাশকতা করে জনগনের জীবন করে তুলেছিল অস্থির। সাতকানিয়া লোহাগাড়ায় ব্যাপকভাবে নাশকতা চালানো হয়েছিল, মানুষ এসব তান্ডবের কথা ভুলেনি। দেশ এগিয়ে চলছে। দেশ এগিয়ে যাবে। এ সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে বার বার চক্রান্ত হয়েছে। দেশ ও জাতির স্বার্থে আওয়ামী লীগ যে কোন সহিংসতা বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ ও মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। এসব বক্তব্যসহ লিফলেট, ফেষ্টুন ও ব্যানার নিয়ে প্রচারনায় আছেন আবু সুফিয়ান। তিনি বলেছেন,’মহাকাশে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপনের মাধ্যমে বাংলাদেশ এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছে।

এই স্যাটেলাইট শুধু বিনোদনের জন্যই নয়। দেশের শিক্ষা, সংস্কৃতি, চিকিৎসা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের তথ্য লাভেও সুযোগ পাবে। এ এক অনন্য অর্জন, অতুলনীয় অনুভুতি। সমালোচনা কাতর দুর্জনের মুখে ছাই দিয়ে, সব দ্বিধা আর শঙ্কা ছাড়িয়ে, সবুজ জমিনে লালসুর্য্য খচিত নিশান নিয়ে ঈশানপানে ছুটে গেছে উপগ্রহ। সেটি শুধু একটি উপগ্রহ নয়, যেন ছুটে যাচ্ছে ১৬ কোটি বাঙ্গালীর স্বপ্ন। জনগন টিভি পর্দায় দেখে আনন্দিত। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর সফল উৎক্ষেপন প্রিয় মাতৃভুমির আসীন হওয়ার গর্বে গর্বিত হওয়ার উচ্ছ্বাস সবার প্রাণে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.