সাতকানিয়ায় দৃষ্টিনন্দন ডিজিটাল ভূমি অফিস

0

মো. দেলোয়ার হোসেন,সিটিনিউজ :: মাত্র ১ বছর ৪ মাসে সাতকানিয়ার ভূমি অফিসকে দৃষ্টিনন্দন ও ডিজিটাল ভূমি অফিসে রূপান্তর করেছেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) আসিফ ইমতিয়াজ। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অফিসের সামনের অংশে বিভিন্ন সর্তকীকরণ, সেবা বিষয়,সিটিজেন, চার্টার ও বঙ্গবন্ধুর বাণী সম্বলিত দৃষ্টিনন্দন ডিজিটাল ব্যানারে সাজিয়েছেন। সে সাথে অফিসে সকল প্রকার কার্যক্রম ডিজিটালাইষ্ট করেছেন।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) আসিফ ইমতিয়াজ সাতকানিয়ায় ২০১৬ সালের ১৫জুন ২৭তম সহকারি কমিশনার হিসাবে যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকে সবকিছুকে পিছনে ফেলে তার কার্যালয়কে আধুনিকায়ন তথা ডিজিটালাইষ্ট করতে ব্যাপক কাজ করেছেন। এনেছেন অফিসে আমুল পরিবর্তন। অফিসের চারিপাশে তারই প্রচেষ্টায় গড়ে উঠেছে বাউন্ডারী ওয়াল। অফিসের সম্মুখভাগে ছায়াবীথি নামে সেবা প্রাপ্তীদের সেবা উদ্যান তৈরি করা হয়।

প্রবেশধারে হেল্পডেক্স নামে আলাদা কক্ষ খোলা হয়েছে। সে সাথে সেবা প্রাপ্তীদের জন্য বিভিন্ন ডিজিটাল ব্যানারে সর্জিত সেবা কক্ষ,পানি খাওয়ার ব্যবস্থা ও বাথরুমের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। অফিসে ঢুকতেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি বাণী ডিজিটাল ব্যানারে স্থাপন করা হয়। যেখানে লেখা রয়েছে, সরকারি কর্মচারীদের জনগণের সাথে মিশে যেতে হবে। তারা জনগণের খাদেম,সেবক,ভাই। তার জনগণের বাপ,জনগণের ভাই, জনগণের সন্তান। তাদের এ মনোভাব নিয়ে কাজ করতে হবে।
তাছাড়া অফিসের প্রতিটি দেয়ালে কিভাবে নামজারীর জন্য আবেদন করা যাবে। আবেদন করার পর, কত দিনের মধ্যে নামজারী হবে, কোথায় আপত্তি করবেন, কোথায় অভিযোগ দিবেন এ সকল বিষয়ে বর্ণনা দিয়ে ডিজিটাল ব্যানার লাগানো হয়েছে। মাত্র ৬ মাস কাজ করে লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে ল্যান্ড ম্যানেজম্যান্ট এপ্যাস, ওয়েব সাইটের মাধ্যমে সেবা গ্রহিতাদের নামজারীর সর্বশেষ অবস্থা যেকোন সময়, যেকোন স্থান থেকে জানার ব্যবস্থা করে দেয়া হয়েছে। নামজারীর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তথ্য জানতে আবেদনকারীরাই ওয়েব সাইটে গিয়ে এপ্যাসের মাধ্যমে জানতে পারবেন।

নামজারীর ব্যাপারে বিলম্ব হলে-পুনঃ প্রস্তাব,আপত্তি,সার্ভেয়ারের তদন্ত,কানুনগোর তদন্তসহ চারটি বিষয়ে কারণে বিলম্ব হতে পারে বলে উল্লেখ করেন। এসব বিষয়ে ওয়েব সাইটের মাধ্যমে সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও জেলা প্রশাসকের বরাবরে অভিযোগ করা যাবে। তাৎক্ষণিক আবেদনের ফাইলটি কোথায় আছে তাও এস.এমএসের মাধ্যমে জানা যাবে। একইভাবে সাতকানিয়া উপজেলার সকল ভিপি মামলার লিজ আদায়ের পরিশোধ। ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ের তালিকা রয়েছে। নামজারীর আবেদন করার পর অগ্রগতি সম্পর্কে আবেদনকারীর মোবাইলে পর পর ৪টি এস.এমএসের মাধ্যমে তথ্য পৌছে যাবে।

হেল্পডেক্স ও ছায়াবীথি সেবা উদ্যানের মাধ্যমে সেবা প্রার্থীগণ নামজারীর আবেদন, মিস মামলার আবেদন, নামজারী রিভিউ সংক্রান্ত আবেদন, করনিক ভূল সংশোধন সংক্রান্ত আবেদন, কৃষি খাস জমি বন্দোবস্তির আবেদন, পাবলিক পিটিশন, অর্পিত সম্পত্তি ইজারা নবায়নের আবেদন, নকলের জন্য আবেদন সেবা গুলি দিয়ে থাকেন। শুনানিতে আগত সেবা প্রার্থীগণ সেবা প্রার্থীকক্ষে বসার সু-ব্যবস্থা,ওয়াস রুম, সুপেয় পানির ব্যবস্থা রয়েছে।

তাছাড়া এপ্যাস ওয়েব সাইটের মাধ্যমে সকল তথ্য, ব্যবহার নিয়ম, নামজারীর সর্বশেষ অবস্থা, জাতির জনক বঙ্গন্ধুর বাণী, সিটিজেন চার্টারের ডিজিটাল ব্যানার ও বিলর্বোড অফিসের সকল স্থানে স্থাপন করে দৃষ্টিনন্দন করা হয়েছে অফিসকে। সকল ইউনিয়ন ভূমি অফিসে, ল্যাপটপ,প্রিন্টার,স্ক্যানার প্রদান করা হয়েছে। ভূমি অফিসে একটি ট্যাব, ২টি ল্যাপটপ,প্রিন্টার,স্ক্যানার রয়েছে। ভূমি অফিসের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পরিচয় পত্র দেয়া হয়েছে দালাল মুক্ত রাখতে।

সহকারি কমিশনার (ভূমি) আসিফ ইমতিয়াজ বলেছেন, তিনি যে এ্যাপস তৈরি করেছেন সেখানে প্রতিটি উপজেলা প্রবেশ করে তাদের তথ্য দিয়ে সাধারণ মানুষকে সেবা দিতে পারবেন। সে সাথে জেলা প্রশাসক তথা চট্টগ্রামে বসে প্রতিটি ভূমি অফিসের কার্যক্রম নিমির্ষে দেখতে পাবেন। কিন্তু কেউ এ এ্যাপেসটি ব্যবহার করেননি।

অথচ এ এ্যাপেসটি তৈরি করতে প্রচুর সময় ও অর্থ ব্যয় হয়েছে। ২য় তলায় তিনি নিজে অর্থ সংগ্রহ করে সংস্কার করেছেন। সেখানে নতুন ভাবে রেকর্ডরুম, সহকারীদের জন্য বসার ব্যবস্থাসহ ব্যাপক সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করেছেন। ৪৫ দিনের মধ্যে নামজারীর আবেদন সম্পূর্ণ করা হয়। তিনি বলেন, ৩০ জন কর্মচারীর জন্য ছবি সম্বলিত আইডি কার্ড দেয়া হয়েছে।

বর্তমানে সাতকানিয়ায় ২০টির অধিক মামলা নেই, কোন ধরণের অভিযোগ ও নেই। ১২টি পয়েন্টে পুরো ভূমি অফিসকে সি.সি ক্যামরায় আওতায় আনা হয়েছে। ১৩ শতক জমির উপর এ ভূমি অফিসটি বর্তমানে দৃষ্টিনন্দন ভূমি অফিসে পরিণত হয়েছে, এ কর্মকর্তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায়। তিনি তার অফিসে প্রাপ্ত কনটেনেনসি বিল ও মেরামত খরচ বাবৎ ৪ লক্ষ টাকার পাশা-পাশি সরকারি ভাবে সাহায্য সহযোগিতা নিয়ে এ ভবনটি দৃষ্টিনন্দন ভবনে পরিণত করেছেন। তিনি এ্যাপেসের জন্য ৬ মাস কাজ করেছেন যে কোন মামলা ৬০ দিনের বেশি লাগে বলে তিনি মত প্রকাশ করেছেন।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.