মৌমাছি মৌমাছি- দাঁড়াও না একবার ভাই
দিলীপ তালুকদারঃঃ মৌমাছি মৌমাছি, কোথা যাও নাচি নাচি, দাঁড়াও না একবার ভাই। ওই ফুল ফোটে বনে, যাই মধু আহরণে, দাঁড়াবার সময় তো নাই। মনে পড়ে গেল ছোটবেলায় পড়া নবকৃষ্ণ ভট্টাচার্য্য এর লেখা প্রিয় সেই ছড়া ‘কাজের লোক’।
কবির মতো মৌমাছি বললেই অবধারিতভাবে আমাদের ভাবনায় প্রথমেই চলে আসে মধু! অথচ ছোট্ট এই পতঙ্গটি বিশ্বসংসার তথা মানবসভ্যতা টিকিয়ে রাখতে প্রতিনিয়ত যে অসামান্য অবদান রেখে চলেছে মধু তার কাছে নস্যি! এক গবেষনায় জানা যায়, পৃথিবীর এই গ্রহে ৮৭% ফসলই পতঙ্গ পরাগী। আর এই ৮৭% এর মধ্যে ৮০% ফসলের পরাগায়ন সংঘটিত হয় মৌমাছি দ্বারা।
পরাগায়ন হচ্ছে সেই প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে উদ্ভিদ তার বংশ বিস্তার করে। এই প্রক্রিয়ায় ফুলের পরাগরেণু পরাগধানী থেকে স্থানান্তরিত হয়ে গর্ভমুণ্ডে পড়ে। পরাগ রেণুর নিজস্ব কোনো চলনশক্তি নেই, তাই চলাচলের জন্যে তার প্রয়োজন হয় বিভিন্ন বাহকের, যেমনঃ বাতাস, পানি, জীবজন্তু, কীটপতঙ্গ। অন্যান্য কীটপতঙ্গের তুলনায় মৌমাছি অধিক প্রজাতির এবং সংখ্যায় অনেক বেশি ফুলে বিচরণ করে।
বৈজ্ঞানিক সভ্যতায় এখন মৌচাষ বাড়লেও মৌমাছির সেই চিরন্তন খাদ্য খোঁজার অভ্যাসটি কিন্তু বদলায়নি। বনে জঙ্গলে বা বাসা বাড়ীর কার্ণিশ এ মৌমাছির বাসা বাঁধা নতুন নয়। তবে মৌমাছির মৌচাক বানানো যে কারুকার্যতা,সবার একাগ্রতা তা সত্যি অপূর্ব।মৌমাছির সম্মিলিত প্রয়াসের ফল স্বরূপ পাওয়া খাঁটি মধূ।
দক্ষিণ চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার ফায়ার সার্ভিসের নির্মাণাধীন ভবনের কার্ণিশে সত্যি অপূর্ব একটি মৌমাছির মৌচাক। ছবিটি তুলেছেন আমাদের চন্দনাইশ প্রতিনিধি দেলোয়ার হোসেন।