স্বীকৃতির উদযাপনকে ‘তামাশা’ বললেন রিজভী

0

সিটিনিউজ ডেস্ক:: স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) কাতার থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের যোগ্যতা অর্জনের সাফল্য উদযাপনে সরকার যে কর্মসূচি হাতে নিয়েছে সেটাকে ‘বিকৃত তামাশা’ হিসেবে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বলেছেন, ‘উন্নয়নের নামে প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জিম্মি করে আওয়ামী লীগের যেকোনো কর্মসূচিতে অংশগ্রহণে বাধ্য করা হচ্ছে।’

বৃহস্পতিবার সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এসব বলেন।

জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভলপমেন্ট পলিসি (সিডিপি) গত ১৫ মার্চ এলডিসি থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের যোগ্যতা অর্জনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয় এবং পরদিন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেনের কাছে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক চিঠি হস্তান্তর করে। এই স্বীকৃতি উদযাপনের অংশ হিসেবে কয়েক দিনব্যাপী কর্মসূচি হাতে নিয়েছে সরকার।

বৃহস্পতিবার ভোরে রাজধানীতে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি যাদুঘরের সামনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্যদিয়ে দিবসটির উদযাপন শুরু হয়। পরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভ্যর্থনা জানানো হয়।

পাশাপাশি দুপুরে রাজধানীর নয়টি স্থান থেকে আনন্দ শোভাযাত্রা বের হয়ে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে শেষ হবে। সন্ধ্যায় সেখানে বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। একইভাবে দেশব্যাপী ২২ থেকে ২৮ মার্চ র‌্যালির আয়োজন করা হবে। সেখানে বিভিন্ন খাতে সরকারের সাফল্য তুলে ধরা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, ‘সরকারের আজকের কর্মসূচি এক বিকৃত তামাশা। গোটা ঢাকা শহরের রাস্তাঘাট অচল হয়ে গেছে, জনজীবন হয়ে গেছে সম্পূর্ণভাবে স্থবির, ঘণ্টার পর ঘণ্টা মানুষ রাস্তায় আটকা পড়ে আছে। সত্যি আমরা আজব দেশে বাস করছি।’

রিজভী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় খরচে বিভিন্ন সভা-সমাবেশ করছেন, নৌকায় ভোট চাচ্ছেন। সরকারি কর্মচারীদেরকে যেভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে, এসব হচ্ছে নির্বাচনী আচরণবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। ইলেকশন কমিশন এসব দেখেও না দেখার ভান করে বরং সরকারকে সহযোগিতা করছে।’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে কারাবন্দি রেখে বিএনপিবিহীন নির্বাচন করার খায়েশ কখনোই পূরণ করতে পারবেন না। বেগম খালেদা জিয়াকে ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচনই অনুষ্ঠিত হবে না।’

রিজভী বলেন, ‘বেগম জিয়া ন্যায়বিচার পাননি। তাকে ন্যায্য-বিচার-প্রক্রিয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। বিচার বিভাগকে অবশ্যই সরকারের প্রভাবমুক্ত হতে হবে। আদালত নিরপেক্ষ না হলে দেশের নাগরিকবৃন্দ নিজেদের ডিফেন্ড করতে পারবে না, তখন বিচারের বাণী সরকারের বাণীতে পরিণত হবে।’

বিএনপি এই নেতা বলেন, ‘অন্যায় আর পাপের সাগরে ডুবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আপনি কি ভেবেছেন চিরদিন রাষ্ট্রক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখবেন? আপনার অবৈধ ক্ষমতার মখমলের চেয়ারের চারপায়ে যে উইপোকা ধরেছে সেটি আপনি টের পাচ্ছেন না। পতন কিন্তু বলে কয়ে আসে না। উত্তরের কালবৈশাখী ঝড়ের মতো কখন যে সেই গদি উল্টে যাবে তা অনুধাবণ করতে পারছেন না।’

হৃদয় থেকে জিয়ার নাম মুছে ফেলা যাবে না
শিশু পাক থেকে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের নাম বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়ার নাম মুছে ফেলার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বর্তমান ভোটারবিহীন সরকার। এখন জিয়া শিশু পার্কের নামও মুছে ফেলার চক্রান্ত হচ্ছে বলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।’

রিজভী বলেন, ‘সরকার শহীদ জিয়ার নাম মুছে ফেলার ঘৃণ্য উদ্যোগ নিলেও জাতির হৃদয় থেকে মহান স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানের নাম মুছে ফেলা যাবে না। তিনি আছেন থাকবেন যুগ যুগ ধরে কোটি কোটি মানুষের অন্তরে।’

রিজভী বলেন, ‘বিএনপির পক্ষ থেকে সরকারের এধরনের উদ্যোগকে ধিক্কার জানাচ্ছি, নিন্দা জানাচ্ছি এবং তীব্র প্রতিবাদ করছি। এধরনের প্রতিহিংসার উদ্যোগ থেকে সরকারকে সরে আসারও আহ্বান জানাচ্ছি।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব, আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, শামসুল আলম তোফা, আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.