আওয়ামীলীগের সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জঃ তরুণ ভোটাররাই ফ্যাক্টর

0

জুবায়ের সিদ্দিকী/গোলাম সরওয়ারঃ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামীলীগ বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখী হচ্ছে। দশ বছর ক্ষমতায় থাকায় তাদের উন্নয়ন কর্মকান্ড যেমন দৃশ্যমান হয়েছে, তেমনই টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় যাওয়ার ক্ষেত্রে সৃষ্টি হয়েছে বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতা।

উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, দলীয় কোন্দল নিরসন, স্যোশাল মিডিয়াসহ বিভিন্ন মাধ্যমে সরকার বিরোধীদের যৌক্তিক জবাব, জোটসহ দলের জনপ্রিয় প্রার্থী বাছাই, এবং বিএনপিসহ সব দলকে নির্বাচনমুখী করা। এগুলো সুষ্ঠভাবে মোকাবেলা করে সবার অংশগ্রহনমূলক নির্বাচন নিশ্চিতে ইসিকে সহায়তা করাই এ মুহুর্তে আওয়ামীলীগের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। এমনটি মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

তাদের মতে সবার অংশগ্রহনমূলক নির্বাচনের মধ্যদিয়ে এবারো তারা ক্ষমতায় গেলে সেটি দেশ ও দেশের বাইরে প্রশংসীত হবে।আওয়ামীলীগ সুত্রে জানা গেছে, উল্লেখিত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় নেওয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। এরই মধ্যে ১৫ সাংগঠনিক টিম তৃণমূলে এবং ৮টি টিম বিভাগীয় পর্যায়ে কাজ করছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা বলেন, আগামী নির্বাচন সবার জন্য চ্যালেঞ্জ। আওয়ামীলীগের জন্যও। স্যোশাল মিডিয়ার অপপ্রচার রোধ করতে এখনই ফিল্টারিং করতে হবে। দলের ভিতর প্রতিযোগীতা আছে। এটা থাকবেই। তবে যেই হোক সবাই নৌকার পক্ষে একযোগেই কাজ করবে। বিএনপিকে ভোটে আনা নয়, তাদের ভোটে আসাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ।

ভোট অনেক প্রতিযোগীতামূলক হবে। চ্যালেঞ্জ তো থাকবেই। আওয়ামীলীগ চ্যালেঞ্জ নিয়েই নির্বাচনে জয়লাভ করে। আগামীতেও করবে। বিএনপিকে আস্থায় নিয়ে নির্বাচনে আনা আওয়ামীলীগের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। দেশজুড়ে সরকারীদল আওয়ামীলীগের একছত্র আধিপত্য থাকায় দলের মধ্যে মনোনয়নকে কেন্দ্র করে নেতৃত্বের বিরোধ মাঠ পর্যায়ে তীব্র।

শেখ হাসিনাসহ দলীয় হাই কমান্ড এটি নিয়ে বিব্রত। ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকগুলোতেও দলের কোন্দল নিরসন এবং জরীপে এগিয়ে থাকা গ্রহনযোগ্য, জনপ্রিয় প্রার্থীদের মনোনয়নের বিষয়টি কথা বলেছেন দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা। একদিকে যোগ্য প্রার্থী বাছাই, অন্যদিকে এমপি মন্ত্রীদের সঙ্গে স্থানীয় নেতাদের দলীয় কোন্দল নিরসন শেখ হাসিনা বা আওয়ামীলীগের সামনে বৃহত্তম চ্যালেঞ্জ।

এছাড়া ভোটের মাঠে জোট বা মহাজোট নাকি এককভাবে হবে তা এখনো চুড়ান্ত হয়নি। ইতিমধ্যে মহাজোটের অন্যতম শরীক জাতীয় পার্টি ৭০টি, ১৪ দলের শরীকরা শতাধিক, জোটে ভিড়তে চাওয়া অন্যান্যদল ৫০টি আসন দাবী করেছে আওয়ামীলীগের কাছে। এছাড়া ক্ষমতায় থাকার কারনে সুবিধাবাদী, মুখোশধারী দালাল, সুযোগসন্ধানী, হাইব্রিডছাড়াও বিএনপি জামাতের অনেকেরই দলে অনু্প্রবেশ ঘটেছে বলে দলের মধ্যেই অভিযোগ উঠেছে। এগুলোরই সমাধান করতে হবে আগে।

আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মূল ফ্যাক্টর হবে দেশের প্রায় আড়াই কোটি তরুণ ভোটার। নবম সংসদ নির্বাচন থেকে এ পর্যন্ত ভোটার তালিকায় যুক্ত হওয়া ২ কোটি ৩৫ লাখের বেশী তরুণ ভোটারের হাতেই আগামী দিনের ক্ষমতার চাবি বলে মনে করেন নির্বাচন বিশ্লেষকরা। নবম সংসদ থেকে এ পর্যন্ত যারা নতুন ভোটার হয়েছেন, তারাই আগামীদিনে দেশের নেতৃত্ব ও নির্বাচনে মূল ভূমিকা পালন করবেন। তরুণরা আগামীর বাংলাদেশ কেমন দেখতে চান, সে অনুযায়ী নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.