সংসদে কথা বলার জন্য সাংবাদিকদের কেউ নেই: রিয়াজ হায়দার চৌধুরী

0

গোলাম সরওয়ার, সিটি নিউজ :: জাতীয় সংসদে কথা বলার জন্য সাংবাদিকদের কেউ নেই। তাই ওয়েজ বোর্ডসহ নানা ন্যায্য নিশ্চিতে সাংবাদিকরা বঞ্চিত। শুধু সাংবাদিক নন, প্রতিটি পেশার প্রতিনিধি সংসদে থাকা উচিত। একথা বলেন পেশাজীবী নেতা ও চট্টগ্রাম নাগরিক উদ্যেগের আহবায়ক রিয়াজ হায়দার চৌধুরী ।

চট্টগ্রামে সাংবাদিকদের রুটি রুজির আন্দোলন, আপদে-বিপদে যিনি পাশে দাঁড়ান নিঃসংকোচে, আন্তরিকতায় জীবনের পরোয়া না করে মামলা-হামলা বা যে কোন নিপীড়ন-নির্যাতন এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদী এক কন্ঠস্বর রিয়াজ হায়দার চৌধুরী।

রিয়াজ হায়দার চৌধুরীকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে বার বার তার উপর হামলা করা হয়েছে। একটি হামলায় গুরুতর আহত হয়ে দীর্ঘদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ২০০৩ সালে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তার উপর হামলা চালানো হয়। গণজাগরণ মঞ্চ চলাকালেও তার উপর হামলা করা হয়। এমনকি নগরীর মাদারবাড়ী এলাকায় তার গাড়ীতে ট্রাক তুলে দিয়ে দুর্বৃত্তরা তাকে হত্যার চেষ্টা চালায়। এভাবে তার জীবনের উপর বার বার আঘাত এসেছে।

মুক্তিযুদ্ধের অবিনাশী চেতনায় স্বাধীনতার সপক্ষের লড়াকু শক্তি হিসেবে কখনো মাথানত করেননি অন্যায়ের কাছে। তারুণ্যের অহংকার রিয়াজ হায়দার চৌধুরী সুষ্ঠ সমাজ বিনির্মাণে তেজোদীপ্ত, সাহসী, সংবাদপত্রসেবী, সাংবাদিকদের অহংকার। তারুণ্য ধারণ করে সত্য প্রতিষ্ঠার প্রেরণা, ভেঙ্গে গড়ার আকাংখা, তিনি যেন ভবিষ্যৎ আলোহীন গহন কালোর অভিমুখে অগ্রসরমান উদীপ্ত এক সংবাদপত্রসেবী।

তারুণ্য হলো বর্ষার খরস্রোতা বহতা নদী। আর নদী হলো প্রকৃতির সুঁধা ধারা। এই তারুণ্য ধারণ করে সত্য প্রতিষ্ঠা ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে খড়গ। সাংবাদিক সমাজের দুর্দিনের কান্ডারী, রাজপথের লড়াকু এক সৈনিক, যার চেতনায় মাতৃভূমি ও মু্িক্তযুদ্ধ তিনিই চট্টগ্রামের সাংবাদিকদের অহংকার রিয়াজ হায়দার চৌধুরী।

চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের স্থায়ী সদস্য, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি ছিলেন। বর্তমানে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ( বিএফইউজে) এর সহ-সভাপতি। পেশাজীবি সংগঠনের নেতৃত্ব দেওয়া ছাড়াও সাংস্কৃতিক মন্ডলের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র রিয়াজ হায়দার জাতীয় দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন ও নিউজ ২৪ চ্যানেলের বিশেষ প্রতিনিধি ও ব্যুরো প্রধান।

বিশিষ্ট সাংবাদিক ও সংগঠক রিয়াজ হায়দার চৌধুরী একান্ত এক সাক্ষাৎকারে বলেন, সাংবাদিক তনয়া রাইফা হত্যাকান্ডসহ যে কোন হত্যাকান্ড নিন্দনীয়। হাসপাতালে মানুষ যায়, চিকিৎসা নিতে ও জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ব্যাধি নিরাময় বা উত্তরণে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে। দেশের মানুষ স্বাভাবিক জীবনের গ্যারান্টি পাওয়ার কথা, সেখানে ভুল চিকিৎসা, অপচিকিৎসা বা দায়িত্ব অবহেলায় কারো মৃত্যু হয়, সেটি মেনে নেওয়ার মতো নয়। রাইফাকে যেভাবে ভুল চিকিৎসায় হত্যা করা হয়েছে তা শুধু সাংবাদিক সমাজ নয় দেশবাসী বিক্ষুব্ধ। ক্ষোভ বিরাজ করছে সর্বত্র। এই ক্ষোভ নিরসন হবে যদি সুষ্ঠ বিচারের মাধ্যমে বিচার নিশ্চিত হয়। এখন এই হত্যাকান্ডে মামলা বিচারাধীন রয়েছে। আশা করি, আমরা এর সুষ্ঠ বিচার পাব।

বিশিষ্ট সাংবাদিক রিয়াজ হায়দার চৌধুরী বলেন, দেশে সাংবাদিক হত্যা, নির্যাতন এখন অহরহ ঘটছে। এই ইতিহাস এখন অনেক পুরনো। সাংবাদিক শামছুর রহমান, দীপংকর চক্রবর্তী, সাগর রুনিসহ এই তালিকা অনেক দীর্ঘ। শিমুল প্রকাশ্য দিবালোকে হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন। সর্বশেষ পাবনায় আমাদের আরেক সহযোদ্ধা আনন্দ টিভির প্রতিনিধি সুপর্ণা আক্তার নদী হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন। নিরাপদ সড়কের দাবীতে আন্দোলন চলাকালে অনুপ্রবেশকারী কিছু দুর্বৃত্ত পেশাগত দায়িত্ব পালনরত সাংবাদিকদের উপর হামলা করেছে এবং অনেকে আহত হয়েছেন। সকল দায়িত্বশীল মহলকে স্ব স্ব অবস্থানে দায়িত্ববান হওয়া উচিত যাতে করে এভাবে সাংবাদিকরা তাদের দায়িত্ব পালনে বাঁধাগ্রস্থ না হন।

রিয়াজ হায়দার চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রামে সাংবাদিক হাউজিং সোসাইটি সাংবাদিকদের আবাসিক সংকট দুর করতে কাজ করছে। এখন শেরশাহ ও কল্পলোক প্রকল্প বিদ্যমান। দুটি প্রকল্পে সাংবাদিকদের আবাসন সংকট দুর করার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তার পাশাপাশি আরো নতুন প্রকল্প নিশ্চিত করা এবং এই দুটি পকল্পে যদি ঘাটতি থেকে থাকে তবে তা কাটিয়ে উঠে শুধুমাত্র হাউজিং এর সদস্য হয়েছেন তারা নয়, যারা হননি তাদেরও আবাসন নিশ্চিত করতে সাংবাদিক হাউজিং সোসাইটি কাজ করছে। আমরা আমাদের অবস্থান থেকে সর্বাত্মক সহযোগীতা প্রদান করে যাব।

তিনি আরো বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের প্রতি অত্যন্ত সজাগ ও আন্তরিক। সাংবাদিকদের কল্যাণে তিনি অনেক কাজ করেছেন। সাংবাদিকদের কল্যাণ তহবিল ও কল্যাণ ট্রাষ্ট গঠনসহ নানাবিধ সাহায্য-সহযোগীতা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দিচ্ছেন। কল্যাণ তহবিলের মাধ্যমে দুঃস্ত, বেকার, অসচ্ছল সাংবাদিকদের সহযোগীতা দেওয়া হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা যতদিন থাকবেন এই সহযোগীতা অব্যাহত থাকবে ইনশাল্লাহ।

রিয়াজ হায়দার চৌধুরী বলেন, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন একটি বৃহৎ সংগঠন। এই সংগঠনের নেতৃত্বের অংশীদার হতে পেরে আমি আনন্দিত। সাংবাদিকদের যে কোন কঠিন সময়ে, সুখে-দুঃখে অতীতের মত ভবিষ্যতেও থাকব পাশে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.