পেশাজীবীদের মনোনয়ন দিলে সংসদ আরো কার্যকর হবে- রিয়াজ হায়দার চৌধুরী

0

দিলীপ তালুকদার,সিটিনিউজ : বাংলাদেশ আর গণমুখী ভবিষ্যৎ রাজনীতির কথা ভেবে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অন্তত একশত নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধি মনোনয়ন দেয়া দরকার। ১৯৭০ এর নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু যেমন দেশজুড়ে নতুন-উদ্যমীদের মনোনয়ন দিয়েছিলেন এবারের নির্বাচনেও ভবিষ্যৎ রাজনীতির স্বার্থে এর বিকল্প নেই। আওয়ামীলীগকেই এইকাজটি করতে হবে। হাইব্রিড, পচনশীল বাম আর ফরমালিনযুক্ত মনোনয়নমুখী ভাড়াটে শিল্পপতিকে নয়, গণমুখী পেশাজীবীদের মনোনয়নে অগ্রাধিকার দিলে সংসদ কার্যকর ভুমিকা রাখতে পারবে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়ন তথা তৃণমূলের মানুষের ভাগ্যেন্নোয়ন করতে হলে এর বিকল্প নেই। সিটিনিউজের সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে একথাগুলো বললেন চট্টগ্রামের পেশাজীবি আন্দোলনের নেতা ও চট্টগ্রাম নাগরিক উদ্যোগের আহ্বায়ক সাংবাদিক রিয়াজ হায়দার চৌধুরী (রাসেল)।

সনাতনী সম্প্রদায়,পেশাজীবী সমাজে অবস্থান, নানা পর্যায়ে সাংগঠনিক সক্রীয়তা ও তারুন্যের সমর্থনের কারনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামের কোতোয়ালী-বাকলিয়া এবং হাটহাজারী আসন থেকে প্রার্থীতার ব্যাপারে জোর আলোচনায় রয়েছেন এই মুক্তিযোদ্ধার সন্তান । এমন আলোচনায় অনেকে মহাজোটের সমীকরণ আর ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের অনৈক্য কাটিয়ে বিএনপির বিভক্তির সুফল ঘরে তুলতে এমন সর্বজন গ্রহনযোগ্য প্রার্থীর ব্যাপারেই ব্যাপক আশাবাদী।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্রেস্ট উপহার দিচ্ছেন সাংবাদিক রিয়াজ হায়দার চৌধুরী

 

একাধারে সংগঠক সাংবাদিক গবেষক ও কবি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী । মাঠের রাজনীতি ও গণমাধ্যমের এই জনপ্রিয় মুখ যুদ্ধপরাধীদের বিচার দাবী এবং চট্টগ্রামের নানা নাগরিক -সামাজিক আন্দোলনে উচ্চকন্ঠ। সাংবাদিকদের মাতৃসংগঠন চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিইউজে) এর সভাপতিও রিয়াজ হায়দার চৌধুরী । সংগঠনটির দুদফা করে সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন । আর প্রতিটি নির্বাচনে সর্বোচ্চ রেকর্ড সংখ্যক ভোট পান। পেশাজীবিদের জাতীয় সংগঠন ‘পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদ’ চট্টগ্রাম শাখার সাধারণ সম্পাদকও তিনি। প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় সমানে কাজ করা এই তরুন সাংবাদিক বিশেষ করে অনুসন্ধানী রাজনৈতিক প্রতিবেদনের জন্য ব্যাপক আলোচিত ।

টেলিভিশনে প্রতিদিন সংবাদ বিশ্লেষন করছেন বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ নিয়ে। শৈশব থেকেই সক্রীয় সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনে। ৫৭ বছরের পুরনো সংগঠন সিইউজে’র ইতিহাসে তিনিই প্রথম প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফরসঙ্গী হন। ইরানে আন্তর্জাতিক ন্যাম সস্মেলনে যোগ দেন। একাধিক গ্রন্থপ্রণেতা এই লেখক-সংগঠক ফ্রান্স,জার্মানী, জাপান,সুইজারল্যান্ড,ন্যাদারল্যান্ড,তুরস্কসহ ইউরোপ-এশিয়ার কয়েকটি দেশ সফর করেন।

ওয়ান ইলেভেনে’র দুঃসময়েও রিয়াজ হায়দার চৌধুরী ছিলেন মাঠে সক্রীয়। বিগত চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের নির্বাচনী ইশতেহার লেখেন তিনি। প্রাক্তন মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর নির্বাচনে ও তাঁর সাথে নাগরিক কমিটি, স্বাধীনতার বইমেলা, মুক্তিযুদ্ধের বিজয়মেলা এবং চট্টগ্রাম বন্দরকেন্দ্রীক আন্দোলনেও সক্রীয় ছিলেন রিয়াজ। ২০০৬ সালে চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্টেডিয়ামে সাংবাদিকদের উপর পুলিশের আক্রমনের প্রতিবাদে সফল আন্দোলনের নেতৃত্বও দেন তিনি ।

চট্টগ্রামের দুই নেতাকে হাসিমুখে এক করলেন রিয়াজ হায়দার চৌধুরী

চট্টগ্রামে গণজাগরনের শীর্ষ এই সংগঠক সংবাদপত্রসেবী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। সাবেক এই ছাত্রনেতা মুক্তিযুদ্ধের বিজয়মেলা পরিষদ, একুশের বইমেলা, স্বাধীনতার বই মেলা, মুজিব সেনা, ত্রিতরঙ্গ, শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদ, ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটি সহ শতাধিক সংগঠনে নানান দায়িত্ব পালন করেন। কৈশোরে ‘বঙ্গ সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী’ নামে একটি সংগঠনও প্রতিষ্ঠা করেন চট্টগ্রাম শহরের বাকলিয়ায়। সনাতনী বা অন্য সম্প্রদায়ের সাথেও নিবীড় সম্পর্ক তাঁর। রামু,পাথরঘাটা কিংবা হাটহাজারীর ফতেয়াবাদসহ বিভিন্ন স্থানে ধর্ম দাঙ্গা সৃষ্টিতে ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে মাঠে জাগর অবস্থানে থাকা পেশাজীবীনেতা রিয়াজ বলেন, এদেশে ’৭২ এর সংবিধানে ফিরে যেতে পারলেই জঙ্গীবাদের দানবমুক্তি সম্ভব। ধর্মীয় বৈষম্য জিঁইয়ে রেখে কিংবা সাংবাদিকসহ পেশাজীবিদের ন্যায্য হিস্যা বঞ্চিত করে কখনো কল্যাণ রাষ্ট্র গড়া সম্ভব নয়। ভিশন, সেটি ২০২১ কিংবা ২০৪১ হোক, সাংবাদিকদের শূণ্য উদরে রেখে কোনটিরই প্রকৃত বাস্তবায়ন হবেনা। কেননা, সাংবাদিকরাই জাতির অন্যসব যন্ত্রকে সচল ও সক্রীয় রাখেন।

চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রিয়াজ হায়দার বলেন, ঢাকার চেয়ে ক্ষেত্র বিশেষে চট্টগ্রামে ভুমির মূল্য, বাজার মূল্য এবং বাড়িভাড়া বেশী হলেও অষ্টম ওয়েজবোর্ডে চট্টগ্রামের সাংবাদিকদের শুভংকরের ফাঁকি দিয়ে বঞ্ছিত করা হয়েছে। প্রত্যাশিত নবম ওয়েজবোর্ডে এমন অবস্থা হলে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

সিইউজে সভাপতি রিয়াজ হায়দার ইতোপূর্বে জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)-এর ইফতার মাহফিল শেষে প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার সাথে এক বৈঠকে ওয়েজবোর্ড, মনিটরিং কমিটি ও সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাষ্টে ঢাকার বাইরের আঞ্চলিক প্রতিনিধিত্বের দাবী তুলেন।

চট্টগ্রামের রাজনৈতিক দলের নেতাদের সাথে রিয়াজ হায়দার চৌধুরী

প্রধানমন্ত্রী এতে সাথে সাথেই মৌখিক সিদ্ধান্তে সম্মতি দেন। গত ৪জুন এবারের ইফতার শেষে প্রধানমন্ত্রীর সাথে শীর্ষ সাংবাদিক নেতাদের আরেক ঘরোয়া সভায় তৃনমূল পর্যন্ত উন্নয়নের বার্তা পৌঁছাতে দল ও প্রশাসনের বাইরে আদর্শিক নীতিনিষ্টদের নিয়ে একটি বিশেষ সেল গঠনের প্রস্তাব দেন রিয়াজ । এসময় তিনি প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিআকর্ষন করে বলেন, “জাতীয় উন্নয়নের সাথে সাথে গণমাধ্যমের উন্নয়নে আপনি যা যা করেছেন, তাও ঠিক প্রচার পায়নি।যারা নিজেরা বিশেষ কোটায় প্লট ফ্ল্যাট পেয়েছেন, বিদেশে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হয়েছেন, সরকারি খরচে হজ্ব করেছেন কিংবা বিভিন্ন সংস্থায় বা কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন, তারা অনেকেই নিজেরাও তা স্বীকার করেননা, লোকজনকে জানান না। তৃণমুলে ঠিকমত ইতিবাচক প্রচারনা না হলে আগামী জাতীয় নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার ক্ষেত্রে একটি আশংকাজনক পরিস্থিতি তৈরী হবে। – প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে এই সাংবাদিকনেতার প্রস্তাবনাগুলো শুনেন এবং নোট নেন।

রিয়াজ হায়দার চৌধুরী বলেন, ‘উন্নয়নে লক্ষ কোটি টাকার প্রকল্পের পর প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে। কিন্তু এই উন্নয়নের খবর সাধারণ মানুষের মনের গহীনে পৌঁছে না। একারণে বিশেষ সেলটি প্রয়োজন ।
এক প্রশ্নের জবাবে এই উন্নয়ন সংগঠক আরো বলেন,ষড়যন্ত্রকারীরা জাতির জনকের মত তাঁর কন্যাকেও জনবিচ্ছিন্ন করতে চায়। ক্ষমতার বলয়ে ক্রমশঃ হাইব্রিড, পচনশীল বাম আর জামায়াত ও তাদের প্রেতাম্মারা ভর করছে । উন্নয়নের ক্ষেত্রেও ঢাকার মন্ত্রী আর কর্তাদের রহস্যজনক আচরনে প্রধানমন্ত্রীর সদিচ্ছা শতভাগ বাস্তবায়ন হচ্ছে না। বঙ্গবন্ধু প্রেমী আদর্শিক লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মী এখনো নানাভাবে বঞ্চিত, নিগৃহিত, অপমানিত। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা অনেকেই এখনো দু’বেলা না খেয়ে কিংবা নানা হয়রানিতে বিচার চেয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। অন্যদিকে তলে তলে স্বাধীনতা বিরোধীরা ফুলে ফেঁপে চাঙ্গা হচ্ছেন। এখনো মৌলবাদের অর্থনীতি গতিশীল। আমরা উন্নয়নের মহাসড়কে উঠেছি ঠিকই, কিন্তু মহাসড়কের মহাগতি নেই, খানা খন্দকে প্রতিকূলতায় ভরা।

বিএনপির হুংকারময় অবস্থা ও তাদের বহিঃশক্তির রহস্যময় তৎপরতার পরিবেশে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে মনোনয়ন প্রক্রিয়া কেমন হওয়া উচিত ?- এমন এক প্রশ্নের জবাবে রিয়াজ হায়দার চৌধুরী বলেন, জনসম্পৃক্ততাহীণ এমপি-মন্ত্রীদের নিয়ে নির্বাচনের ঘানি টানা ঠিক হবে না। ভিশন ২০৪১ কে ঘিরে নবীন উদ্যমী জনসম্পৃক্ত তারুন্যকে মনোনয়ন দেয়া উচিত। দলে বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে প্রয়োজনে দলের বাইরে থেকে পেশাজীবী প্রতিনিধিকে মনোনয়ন দিয়ে মহাজোটের সমীকরণ এবং বিভক্তি গুছাতে হবে। নবীন ও পেশাজীবীদের প্রয়োজনে নির্বাচনী ফান্ড দিয়ে মাঠে নামানো দরকার। তারাও যাতে আসন্ন সংসদ এবং আগামীর রাজনীতি পরিচালনায় অংশ নিতে পারেন।

চট্টগ্রামের বিজয়মেলা মঞ্চে বিশিষ্টজনদের সাথে রিয়াজ হায়দার চৌধুরী

রিয়াজ বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অনেক চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন। দলকে ছাড়িয়ে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা বৈশ্বিক। আগামী নির্বাচনকে ঘিরে এখন আরেক চ্যালেঞ্জেও জিততে হবে আমাদেরই।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে রিয়াজ হায়দার বলেন, লক্ষ কোটি টাকার উন্নয়নের খবর ঠিক প্রচার না হওয়ার প্রধান কারণ তৃনমূলের সাথে অনেক এমপি, মন্ত্রী বা মনোনীত প্রশাসনিক ও উন্নয়ন সেবা কর্তার সংযোগ নেই। তাঁরা প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার প্রচার দূরে থাক, কখন যে গণমাধ্যম কমীদের সাথে বসে চা-খেয়েছেন, তাও ভুলে গেছেন। পেশাজীবি মানুষের সাথে তাদের দূরত্ব প্রকট।

রিয়াজ হায়দার চৌধুরী বলেন, একশ্রেণীর ব্যবসায়ী রাজনীতিক আছেন যারা নির্লজ্জভাবে কেউ নিজেদের রাজনীতির পারিবারিক জমিদার ভাবেন, উত্তরাধিকারে কিংবা পরিবারকেন্দ্রীক মনোনয়নও দাবী করেন ! এমন দাবীতে তারা কখনো কখনো আঞ্চলিক পর্যায়ে নিজেদের গুরুত্ব বুঝাতে বঙ্গবন্ধু পরিবারের সাথেও তুলনা করে ধৃষ্টতা দেখান ! দল কখনো তাদের পদ, সরকার কখনো বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক পদবী ও জনতা কখনো কখনো তাদের রায় দিয়েই গেছেন। বিনিময়ে এমন পরিবারগুলো আসলে দেশকে কতটুকু দিয়েছে, তা ভাবা দরকার। বাইশ পরিবার থেকে মুক্তি মিললেও এই নব্য পরিবারগুলো রাষ্ট্র্র ও সমাজকে গ্রাস করছে। আগামীর নির্বাচনে এদের কবল থেকে মুক্তি দরকার।

চট্টগ্রাম নাগরিক উদ্যোগের আহ্বায়ক রিয়াজ আরো বলেন, চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রয়োজনীয় বরাদ্ধ নেই। পাকিস্তান আমলে পিন্ডির সাথে ঢাকার যে বৈষম্যের দূরত্ব, তা এখন ঢাকার সাথে চট্টগ্রামের। সার্বিক সেবা ও উন্নয়নে সমন্বয়ও নেই। এমপি মন্ত্রী আর মেয়রের দৃশ্যমান সুসম্পর্কের বাস্তবিক প্রয়োগ চট্টগ্রামবাসী দেখছেন না। সুইমিং পুল নিয়ে যা হয়ে গেল, তা’ই এর বড় প্রমাণ।

রিয়াজ বলেন, উন্নয়নে মানুষের ব্যাপক অংশগ্রহন এবং অগ্রাধিকার বিবেচনা জরুরী। চট্টগ্রাম শহরে ফ্লাইওভার আর টানেল নির্মান, নাকি কালুরঘাট হয়ে ফৌজদারহাট পর্যন্ত কর্ণফুলী পাড়ের মেরিন ড্রাইভওয়ে নির্মাণ বা সড়ক দ্বিগুন তিনগুন করে স¤প্রসারন আগে জরুরী, দীর্ঘস্থায়ী সুফল কোনটিতে ,তা বিবেচনা করা দরকার। উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর উদার সহযোগিতার ‘নয় ছয়’ কেউ করছেন কিনা তা ভাবা এখন সময়ের দাবী। চট্টগ্রাম বন্দরের সর্বোচ্চ ব্যবহার চাই। চট্টগ্রামকে কমগুরুত্ব দিয়ে অপরিণামদর্শীভাবে যারা মংলা ও পায়রা বন্দরকে বেশী গুরুত্ব দিচ্ছেন, তারা কেন বা কাদের স্বার্থে তা করছেন, সেটি খুঁজে বের করতে হবে। কর্ণফুলী ড্রেজিংয়ের নামে কী হয়, তা দেশের স্বার্থে তদন্ত দরকার। সমন্বয়হীনতা দুর করতে জনস্বার্থে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের হস্তক্ষেপ করা উচিত। জাতীয় স্বার্থেই চট্টগ্রামের জন্য বিশেষ বরাদ্দ দরকার।
জনাব চৌধুরী বলেন,সন্ত্রাস মাদক, মৌলবাদ, রাজনৈতিক হানাহানি ও জঙ্গীতৎপরতা রোধে সার্বজনীন ঐক্য প্রয়োজন। সম্পদ লুট আর বৈশ্বিক রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তারের জন্য বাংলাদেশকে ঘাঁটি বানাতে আন্তর্জাতিক চক্রান্ত চলছে। ধর্মকে পুঁজি করছে ওরা। জঙ্গীবাদি থাবায় ইসলামের পবিত্রতা প্রশ্নবিদ্ধ করছে। দেশে আরেকটি যুদ্ধ চলছে। এই যুদ্ধে দেশপ্রেমিক নাগরিকের ঐক্য প্রয়োজন।

রিয়াজ বলেন, মনোনয়নকামী ফরমালিনযুক্ত চেতনাধারী শিল্পপতি রাজনীতিবিদগণের কেউ উন্নয়নের নামে প্রকল্প লুটে, কেউ ব্যাংক লোপাট করে কিংবা কেউ ভুমিদস্যুতায় ধনপতি হয়েছেন। ইদানিং ইফতার ও যাকাতের টাকা নিয়ে তারা ওয়ার্ডপর্যায়ে নির্বাচনমুখী রাজনীতিতে সক্রীয়! যাকাতের টাকার বহর বাদ দিলে মানুষকে দেয়ার মত আসলে তাদের কি’ইবা আছে ! রাজনৈতিক নেতাকর্মীদেরই ভাবতে হবে, যাকাতের টাকা তাঁরা নিজেদের পরিবার- বউ বাচ্চার জন্যে ব্যয় করবেন কিনা।

রাজনীতিতে ধর্মকে পুঁজি করা বর্ণচোরা রূপ আর রক্তচোষা হাইব্রিডদের প্রভাব নিয়ে তরুন এই কবি তুলে ধরেন তার কাব্যপঙতি- ‘সারারাতভর নামাজ পড়েও পাওয়া যায় কী খোদাকে ? / যদি না আঁকেন হৃদয়ের মাঝে নবীদের সেরা নবীকে ! / মাঠে ময়দানে সভা সমাবেশে/ গলা ফাটানো / বক্তৃতা দিয়ে লাভ কী / শ্রমিকের ঘাম মেধার চেয়েও / যদি প্রিয় হয়/ মালিকের দেয়া খামটি ! / জনতার খোঁজ নিতে হবে রোজ/ যদি হতে চান জননেতা / এখন বাংলা হাইব্রিডে ভরা,/ রাজনীতি চরে চোরা বালি ফাঁদ পাতা /…।

 

চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রিয়াজ হায়দার আরো বলেন, নবম ওয়েজবোর্ড, টেলিভিশন ও অনলাইন সাংবাদিকদের জন্য পৃথক নীতিমালাসহ ওয়েজবোর্ড না দিলে গণমাধ্যমের অস্থিরতার আগুনে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও আগামীর পথ চলা বিঘ্নিত হবে।

প্রসঙ্গক্রমে রিয়াজ এও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্বদিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও নবম ওয়েজবোর্ড ঘোষনার প্রক্রিয়াকে যারা মিডিয়া মোগল মালিকপক্ষের কারনে, কিংবা কোন কোন শীর্ষনেতার দ্বন্ধের কারনে বিলম্বিত করছেন, তারা ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হবেন।

তিনি বলেন, গণমাধ্যমে ঢাকা কিংবা কেন্দ্রের দৃষ্টি ভঙ্গি এখনো মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাথে সাংঘর্ষিক। ঢাকার কর্তারা অনেকেই এখনো চট্টগ্রাম বা অন্যজেলা-বিভাগীয় শহর গুলোর সহকর্মীদের বৈষম্যের চোখে দেখেন, যা উচিৎ নয়।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.