কক্সবাজারে ৭৭ হাজার হেক্টর জমিতে হচ্ছে আমনের আবাদ

0

শাহজাহান চৌধুরী শাহীন, কক্সবাজার:: কক্সবাজার জেলার আট উপজেলায় চলতি মৌসুমে ৭৭ হাজার ৭’শ ৩৩ হেক্টর জমিতে আমন চাষ করা হচ্ছে। ওই জমিতে প্রায় ২ লাখ ৯ হাজার ৫শ ৭৮ মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ইতোমধ্যে শতভাগ আমন চারা রোপন শেষ হয়েছে। এবছর আমন মৌসুমে তিন জাতের ধানের আবাদ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
সরকার কৃষকদের সুবিধার্থে ক্ষতি কাটিয়ে পুরোদমে পুনরায় চাষাবাদের জন্য সার ও বীজে ভর্তুকি প্রদান করেছে। কিন্তু এই সুযোগ কক্সবাজার জেলার কৃষকরা বঞ্চিত হলেও চলতি বছর নব উদ্যমে কৃষকরা চালিয়ে যাচ্ছেন আমন উৎপাদনের কাজ। গেল বছর ধানের দাম অতিরিক্ত পাওয়ার কারনে চলতি বছরও কৃষকদের মাঝে আমন চাষে বাড়তি আগ্রহ কাজ করছে।

কক্সবাজার জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানাগেছে, নিবিড় বার্ষিক সফল উৎপাদন কর্মসূচীর আওতায় ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছর প্রায় ৭৭ হাজার ৭শ ৩৩ হেক্টর জমিতে আমন ধান (উপজেলা ভিত্তিক জমিতে) আবাদ ও উক্ত জমিতে ২ লাখ ৯ হাজার ৫’শ ৭৮ মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।

সুত্র মতে, জেলার আটটি উপজেলা ভিত্তিক আবাদ ও উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা যথাক্রমে- কক্সবাজার সদর উপজেলায় ৯ হাজার ১শ হেক্টরে ২৪ হাজার ৫শ ৮৪ মেঃ টন, রামু উপজেলায় ৯ হাজার ৪শ ৫ হেক্টরে ২৫ হাজার ৬শ ৬৬ মেঃ টন, চকরিয়া উপজেলায় ১৯ হাজার ২শ ২৮ হেক্টরে ৫২ হাজার ১১মেঃ টন, পেকুয়া উপজেলায় ৮ হাজার ৪শ ৫০ হেক্টরে ২২ হাজার ৫শ ৯৬ মেঃ টন, উখিয়া উপজেলায় ৯ হাজার ১০ হেক্টরে ২৪ হাজার ৮শ ৪৭ মেঃ টন, টেকনাফ উপজেলায় ১০ হাজার ৮শ ৪০ হেক্টরে ২৯ হাজার ১শ ৮৬ মেঃ টন, মহেশখালী উপজেলায় ৮ হাজার ২শ হেক্টরে ২২ হাজার ৫শ ৬৮ মেঃ টন ও কুতুবদিয়া উপজেলায় ৩ হাজার ৫শ হেক্টরে ৮ হাজার ১শ ২০ মেঃ টন।

এই পরিমাণ জমিতে আবাদকৃত তিন জাতের ধান হল উফশী, স্থানীয় ও হাইব্রীড। এদের মধ্যে হাইব্রীড জাতের ৯৪৫ হেক্টর জমিতে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা র্নিধারণ করা হয়েছে ৩৩০৮ মেট্রিকটন। উপসী জাতের ৬৮,৯৮৮ হেক্টরে ১,৯৩,১৬৬ মেট্রিকটন। এছাড়া স্থানিয় জাতের ৭৮০০ হেক্টরে ৩১,১০৪ মেট্রিকটন। জেলায় ৩ জাতের ধানের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৩৭ হেক্টরে হাইব্রীড জাতের ধানের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৯৪৫ হেক্টরে ৩৩০৮ মেট্রিক টন। উফশী জাতের ৬৮ হাজার ৯শ ৮৮ হেক্টরে ১ লাখ ৯৩ হাজার ১শ ৬৬ মেঃ টন এবং স্থানীয় জাতের ৭৮০০ হেক্টরে ১৩ হাজার ১শ ৪ মেঃ টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

কক্সবাজার সদর উপজেলার কয়েকজন প্রান্তিক ও বর্গাচাষি জানান, গত বছর ধানের দাম বাড়ার কারণে আমরা আগ্রহ নিয়ে মাঠে নেমেছি , আশা করি এ বছর ও ধানের নায্যমূল্য পাব।

কিন্তু তাদের অভিযোগ, কক্সবাজার সদরের ঝিলংজা বীজের খামারে সরকারিভাবে আনা বীজ মৌসুমের শুরুর দিকে কালোবাজারে চলে যাওয়ায় চড়া দামে বীজ কিনতে হয়েছে তাদের। মৌসুমের শুরুতে বীজের বাজার তদারকির জন্য ডিলারদের কাছে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন কৃষকরা।
জেলায় আমন মৌসুম শুরুতেই এ বছর ঘনঘন বন্যা ও প্রাকৃতিক দূর্যোগ বেশি হওয়ায় আমনের উৎপাদনের লক্ষ্যামাত্রা অর্জন নিয়ে শংকা ছিল। তবে জেলায় উৎপাদনের লক্ষামাত্রা অর্জন হলেও সম্প্রতি মিয়ানমার থেকে আসা লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে খাদ্যের যোগান অসম্ভব হয়ে দাড়াঁবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক আকম শাহারিয়ার বলেন, গত বছরের মত এ বছর ও আমন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। মাঠকর্মীদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে যেন কৃষকরা ভালোভাবে ফসল উৎপাদন করতে পারে। নিয়মিত উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের নানা পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।

তিনি আরো জানান, এ বছর ২ দফা বন্যার কারণে চাষাবাদে কৃষকদের বিঘ্ন ঘটলে ও শেষ পর্যন্ত শতভাগ আমন চাষ শেষ করেছে কৃষকরা। মৌসুমের শুরুতে বন্যার কারণে রোপা সংকট কাটিয়ে পুরোদমে আবাদ শেষ করেছে কৃষকরা।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.