কুম্ভমেলায় ভক্তানুরাগীদের পদচারণায় মুখরিত ঋষিধাম

0

বাঁশখালী প্রতিনিধি : বাঁশখালীর ঋষিধামে ১৯তম আন্তর্জাতিক ঋষিকুম্ভ মেলায় লোকে লোকারণ্য ও সাধু সন্ন্যাসীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে ঋষিধাম প্রাঙ্গন। দেশ বিদেশের আগত ভক্তানুরাগীদের আগমনে তিল পরিমাণ জায়গা নেই বিশাল এলাকা জুড়ে অবস্থিত ঋষিধামের সেই ঋষিকুম্ভ মেলায়। পরমপুরুষ শ্রীমৎ স্বামী অদ্বৈতানন্দ পুরী মহারাজ সনাতনী সম্প্রদায়ের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। যার আদর্শ ছিল মহান, চেতনায় ছিল গোটা বিশ্ব। তিনি ছিলেন যোগী পুরুষ।

সারাবিশ্বে হানাহানি, রক্তপাত, সংঘাত বন্ধে ও মানবতাকে রক্ষায় যেন শুধুমাত্র পৃথিবীতে এসেছিলেন এই পরমপুরুষ। তিনি শুধু ঋষি নন, তিনি যুগাবতার, তিনিই শিবকল্পতরু শ্রীমৎ স্বামী অদ্বৈতানন্দ পুরী মহারাজ বাঁশখালী ঋষিধামে অনুষ্ঠিতব্য ঊনবিংশতম আন্তর্জাতিক ঋষিকুম্ভ ও কুম্ভমেলা পরিদর্শনে ।

যুগাবতার শিবকল্পতরু শ্রী শ্রীমৎ স্বামী অদ্বৈতানন্দ পুরী মহারাজ প্রবর্তিত বাংলাদেশে একমাত্র চট্টগ্রামের বাঁশখালী ঋষিধামে ঋষিকুম্ভ ও কুম্ভমেলা সম্পর্কে জানতে চাইলে মহাশোভাযাত্রার আহবায়ক ও উপজেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি প্রদীপ গুহ আরো বলেন, ঋষি শিল্পের রূপকার পরমপ্রেমাবতারী শিবকল্পতরু শ্রীমৎ স্বামী অদ্বৈতানন্দ পুরী মহারাজ তাঁরই পরমারাধ্য গুরুদেব জগদ্গুরু শ্রীমৎ স্বামী জগদানন্দ পুরী মহারাজের কৃপাবলে পূর্ণকুম্ভের অধিকারী হয়ে কুম্ভের অনুসরণে এ দেশের হতদরিদ্র ভক্ত জনসাধারণের তীর্থ সেবার মহৎ ফল সহজলব্য করার উপায় হিসেবে তাঁরই লীলাক্ষেত্র চট্টগ্রামস্থ বাঁশখালী ঋষিধামে এ ঋষিকুম্ভ-এর প্রবর্তন করেন।

শ্রী গুরু মহারাজের কথা-‘শ্রী জগদ্গুরুর শ্রীপাদপদ্ম সর্বতীর্থ সার, পরম পূণ্যতীর্থ’। মুক্ত পুরুষদের বলা হয় ‘জঙ্গমতীর্থ’। সে সর্বতীর্থ সারতে আশ্রয় করে ভক্তপদরজঃ স্নান, সাধু দর্শন এবং মহানামসংকীর্থন শ্রবণে কুম্ভ স্নানের ফল লাভ হয়ে থাকে।তাই শ্রী জগদ্গুরুর অর্চনা এবং তৎসঙ্গে হরিকথামৃত আকণ্ঠ পান করারও অপূর্ব সুযোগ লাভ করে পরিতৃপ্ত হতে পারে অগণিত তর্থীকামী ভক্ত-সজ্জন। কেবল এ কারণেই শুভ উদ্যাপন ঋষিধামে ‘ঋষিকুম্ভ’।

এদিকে গত ৫ ফেব্রুয়ারী হতে অনুষ্ঠিতব্য ঋষিকুম্ভমেলায় আজ অহোরাত্র নাম সংকীর্তন, মঙ্গল আরতি ও জয়গানে মঙ্গল আহবান, শ্রী শ্রী গুরু মহারাজের পূজা, বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা, শ্রী শ্রী গুরু মহারাজের ভোগরাগ ও সমবেত প্রার্থনা, মহাপ্রসাদ বিতরণ, সন্ধ্যারতি ও সমবেত প্রার্থনা, মহাপ্রসাদ বিতরণ, ৭ম দিবস ১১ ফেব্রুয়ারী মঙ্গল আরতি ও জয়গানে মঙ্গল আহবান, ঊষালগ্নে ষোড়ষপ্রহরব্যাপী মহানামযজ্ঞের পূর্ণাহুতি, শ্রী শ্রী গুরু মহারাজের পূজা, বিশ্ব কল্যাণে ভূবনমঙ্গল গীতাযজ্ঞ, শ্রী শ্রী গুরু মহারাজের ভোগরাগ ও সমবেত প্রার্থনা, মহাপ্রসাদ বিতরণ, সমাগত ঋষি-তপস্বী, সাধু-সন্ন্যাসী, বৈঞ্চব ও ভক্তবৃন্দের পদরজঃ গ্রহণ, সন্ধ্যারতি ও সমবেত প্রার্থনা, মহাপ্রসাদ বিতরণ, ৮ম দিবস ১২ ফেব্রুয়ারী ঊষালগ্নে মঙ্গলারতি ও সমবেত প্রার্থনা, শ্রী শ্রী গুরু মহারাজের পূজা, দীক্ষানুষ্ঠান, শ্রী শ্রী গুরু মহারাজের ভোগরাগ ও সমবেত প্রার্থনা, মহাপ্রসাদ বিতরণ, শ্রীমদ্ভগবদগীতা পাঠ, সমাগত ঋষি-তপস্বী, সাধু-সন্ন্যাসী ও বৈষ্ণব ও ভক্ত বিদায়ের অনুষ্ঠান ও পদরজঃ গ্রহণ এবং পরিসমাপ্তি ঘোষণা।।

এদিকে ঋষি কুম্ভমেলায় বিভিন্ন দূর দূরান্ত থেকে আসা কয়েকজন দর্শনার্থীদের সাথে কথা হলে তারা বলেন, বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত এই কুম্ভমেলায় সারা দেশ তথা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাধু, সন্ন্যাসী ও ভক্তবৃন্দের আগমন ঘটে। কুম্ভ মেলার উদ্যাপন পরিষদের আহবায়ক রাউজান পৌরসভার মেয়র দেবাশীষ পালিত বলেন, এবারের কুম্ভমেলায় যে পরিমাণ লোকসমাগম হয়েছে সতিই পূণ্যবান মনে নিজেদের। প্রশাসন এবং সর্বস্তরের জনগণ আমাদের আন্তরিক ভাবে সহযোগিতা করে এই মেলাকে সুষ্ঠ ভাবে সম্পাদনের জন্য সার্বিক সহযোগিতা করে যাচ্ছেন।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.