কোনাখালী-বদরখালী সড়কের বেহাল দশা

0

বশির আল মামুন,চকরিয়া::কক্সবাজারের চকরিয়ার কোনাখালী-বাঘগুজারা-বদরখালী সড়কটির বেহাল দশা পরিলক্ষিত হলেও কক্সবাজার সওজ কিংবা এলজিইডির কোন নজরদারী নেই।একের পর এক ভয়াবহ বন্যায় এ সড়কটির কোনাখালীর একাধিক পয়েন্টে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে বিশাল অংশ মাতামুহুরী নদীতে বিলিন হয়ে যাচ্ছে। এর পরেও সংশ্লিষ্ট দপ্তর মাতামুহুরীর ভাঙন থেকে সড়কটি রক্ষায় কোন উদ্যোগ নিচ্ছেনা। ফলে ভাঙ্গা স্থান দিয়ে মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন চলাচল করছে শত শত যানবাহন।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, এ সড়কটি মূলত পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্মিত মাতামুহুরী নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ। মানুষের যাতায়াত ও যানবাহন চলাচলের সুবিধার্থে এই বাঁধটি সড়ক হিসেবে ব্যবহার জন্য বিগত ২০০৪ এবং ২০০৯ সালে দুই দফায় সড়কটিতে কার্পেটিং ও ঢালাই এর কাজ করে দেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। কিন্তু এর পর থেকেই সড়কটির মেরামত ও সংস্কার কাজে কেউ এগিয়ে আসছেনা।এরইমধ্যে বিগত সময়ে একাধিক বার ভয়াবহ বন্যায় সড়কটি ভেঙে লন্ড ভন্ড হয়ে যায়। এতে চরম ঝুঁকির মধ্যে এ সড়কে চলাচল করছে যানবাহন ।

সরজমিন সড়কটিতে দেখা গেছে চিরিঙ্গা-জনতা মার্কেট হয়ে কোনাখালী ইউনিয়ন পর্যন্ত মোটামুটি যান চলাচল উপযোগী থাকলেও কোনাখালীর বাঘগুজারাস্থ মাতামুহুরী নদীর সেতু থেকে বাংলাবাজার হয়ে বদরখালী বাজার পর্যন্ত মাতামুহুরী নদীর তীর ঘেঁষেই সড়কটি চলে গেছে।যার ফলে প্রায়ই ১২ কিলোমিটার পর্যন্ত সড়কটি নদীতে বিলিন হয়ে যাওয়ায় মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। তাছাড়া পুরো সড়কের একাধিক স্থানে বড় বড় খানা-খন্দকের সৃষ্টি হওয়ায় দুর্ভোগ আরো বেড়ে গেছে যাত্রীদের। যান চালক ও যাত্রীদের বেশি সমস্যার সম্মুখিন হতে হচ্ছে কোনাখালী ইউনিয়নের সিকদার পাড়া এবং বাংলাবাজার এলাকার পশ্চিমে সড়কের অর্ধেকাংশ নদীগর্ভে বিলিন হয়ে যাওয়ায়। এই দুই স্থানে সড়ক একেবারে সংকুচিত হয়ে যাওয়ায় ঝুঁকিও বেড়ে গেছে। প্রতিদিন অন্তত কমপক্ষে ৩ শতাধিক ছোট বড় বিভিন্ন যানবাহন এই সড়ক দিয়ে চকরিয়া পৌরশহর চিরিঙ্গাতে চলাচল করে থাকে।

কোনাখালী ইউনিয়নের সিকদার পাড়ার বাসিন্দা ফজলুল করিম, সাইফুল ইসলাম জানান ‘এটি মূলত মাতামুহুরী নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ অর্থাৎ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্মিত বেড়িবাঁধ। ২০০৪ সাল থেকে এই বাঁধকে সড়ক হিসেবে ব্যবহারের সুবিধার্থে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর বাঁধের ওপর পিচ ঢালাই করে দেয়। তখন থেকেই বেঁড়ী বাধটি বিকল্প সড়ক হিসেবে ব্যাপক ভাবে যানবাহন চলাচল শুরু হয় ।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, মাতামুহুরী নদীর দুই তীরের বিভিন্ন পয়েন্ট প্রভাবশালীরা দখলে নিয়ে দোকানপাট ও মাছের ঘের নির্মাণ করায় নদীতে পানির প্রবাহ বাঁধার মুখে পড়ে। এতে একদিকে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানি এবং অপরদিকে অস্বাভাবিক সামুদ্রিক জোয়ারের পানির তোড়ে সড়কটি বার বার ক্ষত-বিক্ষত হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এখনো টনক নড়েনি।

চকরিয়া উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্র জানায় বিগত ২০০৪ প্রথম দফায় সড়কটিতে পিচ ঢালাই দেওয়ার পর যানবাহন চলাচল শুরু হয়। এর পর ২০০৯ সালে দ্বিতীয় দফায় দেওয়া হয় পিচ ঢালাই। কিন্তু বিগত ৩ বছরের একাধিক ভয়াবহ বন্যা এবং অস্বাভাবিক সামুদ্রিক জোয়ারে সড়কটির অনেক স্থানে বিলিন হয়ে যায় নদীতে।

কোনাখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান দিদারুল হক সিকদার বলেন, ‘কোনাখালীর বাঘগুজারা-বদরখালী সড়কটি আমার ইউনিয়নের রক্ষাকবচ। এটি বর্তমানে যানবাহন চলাচলের সড়ক হলেও একসময় ছিল নদীর বেড়ীবাঁধ। বিকল্প চলাচলের সুবিধার্থে এটিকে সড়কে রূপান্তর করেন এলজিইডি। কিন্তু প্রতিবছর ভয়াবহ বন্যা এবং সামুদ্রিক অস্বাভাবিক জোয়ারের প্রভাবে সড়কটি নদীতে বিলিন হলেও সংশ্ষ্টি কর্তৃপক্ষের এনিয়ে কোন মাথাব্যথা নেই। মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন চলাচল করছে যানবাহন। ঘটছে নানা দুর্ঘটনাও।

চকরিয়া উপজেলা প্রকৌশলী রনি সাহা বলেন, একের পর এক বন্যায় ক্ষত-বিক্ষত হয়ে যাওয়া সড়কটি টেকসইভাবে নির্মাণের জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে। এর পর বাঘগুজারা থেকে বদরখালী পর্যন্ত সড়কটির প্রস্তাবনা প্রেরণ ও দরপত্র আহবান করা হয়েছে। যে কোন সময় কাজ শুরু করা হবে

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.