চিরঞ্জীব আখতারুজ্জামান চৌধূরী বাবু

0

এডভোকেট সালাহ্উদ্দিন আহমদ চৌধূরী লিপু :: আলহাজ্ব আখতারুজ্জামান চৌধুরী একটি আদর্শ, ইতিহাস ও একটি প্রতিষ্ঠানের নাম। তিনি ইতিহাসের অমর কাব্যের কবি। তাঁর রয়েছে বীরত্বগাথা ইতিহাস। তিনি চিন্তা চেতনায় ও ধ্যান ধারনায় একজন উদার মনের মানুষ ছিলেন। তিনি দেশ ও জাতিকে দেশপ্রেমের দীক্ষা দিয়েছিলেন। জনাব বাবু একজন উজ্জ্বল নক্ষত্র। তিনি একজন অতুলনীয় ব্যক্তি, তার তুলনা তিনি নিজেই। তাই তিনি আমাদের আদর্শিক চেতনার পথিকৃত। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাঙালি জাতির মুক্তির সংগ্রামে তিনি সম্পৃক্ত হয়ে নিজেকে উদারভাবে উজাড় করে দিয়েছিলেন। স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষায় যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করেন। তাঁর অবদান ইতিহাসের পাতায় অনন্তকাল স্বর্ণাক্ষরে লিপিবদ্ধ থাকবে।

দেশবরণ্য জাতীয় নেতা, বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ট সহচর,স্নেহভাজন ও বিশ্বস্ত, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য, চট্টগ্রাম-১৩ সংসদীয় আসনে সাংসদ, পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি, ৭৭ জাতি চেম্বার অব কমার্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট, দি ফেডারেশন বাংলাদেশ অব চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাষ্টিজের ও দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাষ্টিজের সভাপতি, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, দেশের শীর্ষ স্থানীয় ইউসিবি ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান, খ্যাতিমান শিল্পপতি, বিশিষ্ট দানবীর, গরীব, দুঃখী, মেহনতী, মাটি ও মানুষের নেতা, চট্টগ্রামের অভিভাবক, চট্টল শার্দুল, বর্ষিয়ান রাজনীতিবীদ, আমাদের সকলের অতি প্রিয় মরহুম আলহাজ্ব আখতারুজ্জামান চৌধুরীর প ম মৃত্যুবার্ষিকীতে জানাই অকৃত্রিম ভালোবাসা ও গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলী। এ বরণ্য ব্যক্তি বীর প্রসবিনী চট্টগ্রামের কর্ণফুলী বিধৌত আনোয়ারা উপজেলাধীন হাইলধর গ্রামের জমিদার এডভোকেট নুরুজ্জামান চৌধুরীর ঔরশে জন্মগ্রহণ করেন। তার অগ্রজ মরহুম বশিরুজ্জামান চৌধুরী অবিভক্ত চট্টগ্রাম আওয়ামীলীগের কোষাধ্যক্ষ ও চট্টল গৌরব এম,এ আজিজের ঘনিষ্ট বন্ধু ছিলেন। তার অনুজ বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম বশরুজ্জামান চৌধুরী মহান মুক্তিযুদ্ধে চট্টগ্রামের প্রথম শহীদ।

এ রাজনীতিবীদ নেতা ছাত্রজীবনে সক্রিয় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। তিনি ১৯৫৮ ইংরেজী সালে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৬৭ ইংরেজী সাল হতে ১৯৭১ ইংরেজী  সাল পর্যন্ত আনোয়ারা উপজেলাধীন হাইলধর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। মরহুম ১৯৬৭ ইংরেজী সালে আওয়ামী রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হন। ১৯৭০ ইংরেজী সালে তিনি সাধারণ নির্বাচনে আনোয়ারা-পশ্চিম পটিয়া হতে প্রাদেশিক সদস্য হন। জনাব বাবু মহান মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদান রেখে গেছেন। ১৯৭১ ইংরেজী সালে বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব বাবু মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে তার চট্টগ্রামস্থ পাথরঘাটার আন্দোলন ও সংগ্রামের সুতিকাগার ঐতিহাসিক ‘জুপিটার হাউস’ থেকে স্বাধীনতা সংগ্রাম পরিষদের কর্মকান্ড পরিচালনা করেন। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র এখান থেকে সাইক্লোষ্টাইল মেশিনে ছাপিয়ে প্রচার করতেন। মহান মুক্তিযুদ্ধ চালাকালীন সময়ে তিনি বন্ধুপ্রতিম দেশ ভারতে গিয়ে প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। মরহুম মুজিবনগর সরকারের ত্রাণ ও পূর্ণবাসন কমিটির অন্যতম সদস্য ছিলেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের মাঝামাঝি সময়ে তিনি বিশ্ব জনমত গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সফর করে বাংলাদেশের পক্ষে জনমত গড়ে তোলেন। ১৯৭২ ইংরেজী  সালে বাংলাদেশ গণ পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি বাংলাদেশ সংবিধান প্রণয়নে অনন্য ভূমিকা পালন করেন। ’৭২ এর সংবিধানের তিনি অন্যতম স্বাক্ষরকারী। ১৯৭৫ ইংরেজী সালের ১৫ আগষ্ট ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করার পর জনাব চৌধুরী নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীদের সংগঠিত করে দল পুনরুজ্জীবন ও পুর্ণগঠনে সাহসী ভূমিকা পালন করেন। নির্ভিক এই নেতা আওয়ামীলীগের দুঃসময়ে আর্থিকভাবে সাহায্য সহায়তা করে দলকে শক্তিশালী করেন। মরহুমের কারণে আওয়ামীলীগের ভিত্তি সুদৃঢ় হয়েছিল। তার সাংগঠনিক ক্ষমতা ছিল অপরিসিম। দলের ক্রান্তিকালে তিনি দিক নির্দেশনা দিয়ে দলকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। ৮০ দশকে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনেও তিনি বলিষ্ট ভূমিকা পালন করেন। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে তাকে কারাবরণ করতে হয়। খালেদা জিয়া আমলেও তাকে অনেক জুলুম নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে।

আলহাজ্ব আখতারুজ্জামান চৌধুরী বুদ্ধিমত্তা, মেধা, বিচক্ষণতা ও যোগ্যতা তিনি দেশ-বিদেশে সব মহলেই ছিলেন আলোচিত ব্যক্তি। তিনি ন্যায় ও নীতিবান একজন আদর্শবান ব্যক্তি ছিলেন। কোন লোভ লালসা তাকে তার আদর্শ থেকে বিচ্যূতি করতে পারেনি। এমনকি বিএনপি ও জাতীয় পার্টির আমলে মন্ত্রীত্বের লোভনীয় প্রস্তাব পেলেও তিনি তা প্রত্যাখান করেন। তিনি চিরজীবন বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অবিচল ছিলেন। সকল লোভ লালসার উর্ধ্বে থেকে তিনি দলকে ভালোবেসে গেছেন। জীবনের অধিকাংশ সময় তিনি রাজনীতি ও মানুষের জন্য ব্যয় করেছেন। অন্যায়ের সাথে তিনি কখনো আপোষ করেননি।

বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী জননেতা আলহাজ্ব আখতারুজ্জামান চৌধুরী একজন অভিজ্ঞ পার্লামেন্টারিয়ান ছিলেন। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১৩ সংসদীয় আসন হতে ১৯৮৬, ১৯৯১ ও ২০০৮ সালে সাংসদ নির্বাচিত হন। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৮ ইংরেজী  সাল হতে আমৃত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি পদে অধিষ্টিত ছিলেন।  আলহাজ্ব আখতারুজ্জামান চৌধুরী রাজনীতি ব্যতীত তিনি একজন সফল ব্যবসায়ী ছিলেন। তিনি বেসরকারী ব্যাংকিং সেক্টরে অন্যতম পথিকৃত। মরহুম একে একে গড়ে তোলেন রনি কেমিক্যাাল, আরামিট লিঃ, ইউসিবি ব্যাংক, জনতা ইনসুরেন্স সহ অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠান। তিনি একজন শিল্প উদ্যেক্তাও বটে। তিনি একমাত্র ব্যক্তি ১৯৮৯ সালে ৭৭ জাতি চেম্বার অব কমার্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে বাংলাদেশের জন্য বিরল সন্মান এনেছিলেন। দেশীয় পরিমন্ডলের বাইরেও বিশ্ব পরিমন্ডলে তার খ্যাতি ছিল ব্যাপক। তিনি ব্যক্তিগত ভাবে পৃথিবীর অধিকাংশ দেশ ভ্রমণ করেছেন।

দানবীর আলহাজ্ব আখতারুজ্জামান চৌধুরী একজন দানশীল ব্যক্তি ও বিশাল হৃদয়ের অধিকারী ছিলেন। সবসময় দুঃস্থ, অনাথ ও অসহায় ব্যক্তিদের প্রতি সাহায্যেও সহযোগিতার হাত প্রসারিত ছিল। কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠিকে রিক্ত হস্তে ফিরে যেতে হয়নি। তার পর্বতসম হৃদয় দিয়ে মানবসেবা করে গেছেন। তিনি চট্টগ্রামের আনোয়ারা, পশ্চিম পটিয়া সহ দক্ষিন চট্টগ্রামের অনেক এলাকায় বিভিন্ন মসজিদ, মাদরাসা, স্কুল কলেজ মন্দির, মঠ ইত্যাদি প্রতিষ্ঠা ও আর্থিক সহায়তা করে গেছেন।

স্নেহ পরায়ণ ও মমতাময়ী মরহুম আলহাজ্ব আখতারুজ্জামান চৌধুরীর ঘনিষ্ট সহচর হিসেবে তাকে খুব কাছে থেকে দেখার আমার সৌভাগ্য হয়েছে। তিনি আমাকে খুব স্নেহ করতেন। আত্মীয়তার সুবাদে তিনি আমাকে নাতি হিসেবে সম্বোধন করতেন। তিনি আমাকে মায়ার বন্ধনে আবদ্ধ করেছিলেন। তার স্নেহে ধন্য আমি। এখনও তার অস্তিুত্ব অনুভব করি। মরহুম অত্যন্ত বিনয়ী, মিষ্টিভাষী, সদালাপী ও নিরহংকারী ছিলেন। তার ব্যবহারে যে কোন লোক মুগ্ধ হতেন। তিনি অতি সহজে মানুষকে আপন করে নিতে পারতেন। তার কাছে কোন অহংকার, গৌরব ক্ষমতার দম্ভ এসব কিছু ছিলনা। তিনি দলীয় নেতা কর্মীদের খুব ভালোবাসতেন। কেন্দ্রীয় নেতা থেকে আ লিক নেতা পর্যন্ত  তাকে সম্মান করতেন। সব দলের নেতাদের সাথে তার ছিল সদভাব ও গ্রহণযোগ্যতা। মরহুম উদার রাজনৈতিক নেতা ছিলেন। তার প্রতি মানুষের অকুণ্ঠ ভালোবাসা ছিল।

জনহিতৈষী মরহুম আলহাজ্ব আখতারুজ্জামান চৌধুরী অত্যন্ত পরোপকারী ছিলেন। তার ব্রত ছিল মানবসেবা। তিনি গরীব, দুঃখী মানুষকে সব সময় দু হাত বিলিয়ে দান করেছেন। যেটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হসিনা পঞ্চদশ অধিবেশনের প্রথম বৈঠকে শোক প্রস্তাবে বলেছিলেন, তার মতো মানুষ এ সমাজে বিরল। তার সবসময় তার সার্সন রোডের ‘ভলকার্ট হাউস’ এর আঙিনা দলীয় নেতা, কর্মী ও সাধারণ জনগণের পদচারনায় মুখরিত থাকতো। কোনদিন বিরক্তি প্রকাশ করতেন না। তিনি মানুষের দুঃখ, দুর্দশার কথা ধৈর্য্য সহকারে শুনতেন এবং তা নিরসনের সাধ্যমতো চেষ্টা করতেন। তিনি সহজে মানুষকে যেকোন সমস্যার সমাধান দিতে পারতেন। রিক্ত হাতে মানুষকে কখনও তিনি বিমুখ করেননি। এই মহান ব্যক্তি ইউসিবি ব্যংক, নিজস্ব প্রতিষ্ঠান সহ বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে অনেক জনকে চাকরী দিয়ে কর্মসংস্থান ও প্রতিষ্ঠিত করে দিয়ে তাদের হৃদয়ে আজীবনের জন্য স্থান করে নিয়েছেন।

জননন্দিত আখতারুজ্জামান চৌধুরীর সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ মৃত্যুর পর স্মরাণাতীত কালের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা হতে হাইলধর গ্রামের বাড়ি পর্যন্ত যতগুলো জানাজা অনুষ্ঠিত হয়, ততগুলো জানাজাতে অগণিত মানুষের ভীষণ ভিড় ও দলীয় নেতা, কর্মী ও সাধারণ মানুষ শোকে মূহ্যমান হয়েছিল। প্রতিটি জানাজায় আমি উপস্থিত ছিলাম। সেদিন আমি নিজে অভিভূত হয়েছিলাম। এ জীবনে অনেক জানাজা দেখেছি, কিন্তু এত লোকের সমাগম কোন জানাজায় দেখিনি। এ জানাজার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে তার প্রতি মানুষের অকৃত্রিম ভালোবাসা ছিল। তার প্রতি অগণিত মানুষের দোয়া ও আর্শীবাদ রয়েছে।

চট্টল দরদী বাবু ভাই শুধু নেতা ছিলেন না। তিনি ছিলেন নেতা সৃষ্টির কারিগর। বাবু ভাই ছিলেন বীর চট্টলার অহংকার ও গৌরব। চট্টগ্রাম ইতিহাসের তিনি অবিচ্ছেদ্য অংশ। তিনি ছিলেন চট্টগ্রামের অভিভাবক। চট্টগ্রামবাসী হারালো তাদের প্রিয় অভিভাবককে। তার মৃত্যুতে জাতি ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের অপুরণীয় ক্ষতি হলো। তার অভাব কোনদিন পুরণ হবেনা। বাবু ভাই আজ আমাদের মাঝে নেই এ কথা ভাবতে অবাক লাগছে। এ ক্ষনজন্মা নেতা বারে বারে আসবেন না এই মর্তলোকে। তার মতো উদার নেতা কোনদিন বীর চট্টগ্রামে জন্ম হবেনা। তিনি কালজয়ী মানুষ। এই সুযোগ্য নেতার মহা প্রয়াণে চট্টগ্রামবাসী শোকাহত। তার অবদান চির অম্লান। তার অবদান জাতি চিরদিন মনে রাখবে। তিনি মানুষের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন অনন্তকাল। আশা আকাঙ্খার মূর্ত প্রতিক আখতারুজ্জামান চৌধুরী সর্বদা চট্টগ্রামের উন্ন্য়ন নিয়ে চিন্তাভাবনা করতেন। প্রাজ্ঞ, ত্যাগী, প্রবীণ ও সিনিয়র নেতা আলহাজ্ব আখতারুজ্জামান চৌধুরীকে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ যথাসময়ে যথাযথ মূল্যায়ন করা হয়নি। যখন তাকে মন্ত্রী করার উদ্যেগ গ্রহণ করা হয়েছিল, তখন তিনি পরপারে পাড়ি জমিয়ে ছিলেন।

আজকের এইদিনে বাবু ভাই আমাদের মাঝে না থাকলেও কোটি  প্রাণে তিনি প্রতি নিয়ত জাগরুক আছেন। আল্লাহ যেন তাকে জান্নাতুল ফেরদৌস নছিব করেন, মৃত্যুবার্ষিকীতে এই কামনা করি।

লেখক :- রাজনীতিবিদ, কলামিষ্ট ও সংগঠক।

               

               

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.