দক্ষিণ চট্টগ্রামে অবৈধ সিগারেটে সয়লাভ !

0

বিশেষ প্রতিনিধি,চট্টগ্রাম : ধূমপান বিষপান হলেও ধূমপায়ীদের কাছে এটা যেন বেঁচে থাকার অন্য এক অবলম্বন। তারপরে সরকারের পক্ষ থেকে ধূমপান নিরুৎসাহিত করার জন্য বিপুল পরিমাণ ভ্যাট ধার্য্য করা হলেও কিছু কিছু অস্বাদু ব্যবসায়ী বিপুল পরিমাণ অবৈধ সিগারেটের সমাহার ঘটিয়েছে দক্ষিণ চট্টগ্রামসহ বাঁশখালীর সর্বত্র। এতে একদিকে ধূমপায়ীরা নানা ভাবে আক্রান্ত হচ্ছে বিবিধ রোগে, অপরদিকে সরকার হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব।

যেসব কোম্পানী সরকারী নিয়ম অনুসারে রাজস্ব প্রদান করে সেই সব কোম্পানীর সিগারেটের গায়ে লাগানো রাজস্বে লোগো টা অপরাপর ভূয়া কোম্পানী গুলো পান এবং সিগারেটের দোকানদার কেজি প্রতি দেড় থেকে ২ হাজার টাকা করে কিনে নিয়ে ব্যবহৃত ও রাজস্বের ওই লোগো গুলো পুনরায় তাদের সিগারেটের গায়ে লাগিয়ে বাজারে বিক্রি করছে।

অপরদিকে সরকারকে ফাঁকি দেওয়ার জন্য এসব সিগারেটের প্যাকেটের গায়ে ২৭ টাকা দাম লেখা থাকলেও সেগেুলো দোকানদার ১০-১৫ টাকায় গ্রাহকদের নিকট বিক্রি করছে। তার অন্যতম কারণ হচ্ছে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার ফলে সিগারেটের যে দাম লেখা রয়েছে তার ছেয়ে ১০-১২ টাকা কম দামে বিক্রি করতে পারছে তারা।

অথচ এসব নিম্ন মানের সিগারেট খেয়ে লোকজন ৮ (আট) টি কঠিন রোগ, যেমন- স্ট্রোক, হার্ট এ্যাটাক, ফুসফুসের ক্যান্সার, ব্রঙ্কাইটিস, টিবি, কন্ঠনালী, শ্বাসযন্ত্রের রোগ, হাপানিসহ জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। অপরদিকে ধোঁয়ায় ধূমপায়ী ছাড়াও সাধারণ জনগণ ক্যান্সারসহ মহিলারা স্তন ও জরায়ুর ক্যান্সার, গর্ভধারণের ক্ষমতা দ্রুত হ্রাস পায়। এক পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, প্রতি বছর ধূমপানের কারণে ৫৭ হাজার মানুষ মারা যায় এবং ৩ লাখ ৮২ হাজার মানুষ তামাক জনিত কারণে পঙ্গুত্ব বরণ করে।

ধূমপানকে নিরুৎসাহীত করার জন্য ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০০৫ এর সংশোধন আইন ২০১৩ অনুসারে পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে ধূমপান নিষিদ্ধ করা হলেও সেটা কেউ মানতে নারাজ। অথচ পাবলিক প্লেস বা পাবলিক পরিবহনে ধূমপান করলে শাস্তি হিসেবে তাকে অনধিক ৩০০ টাকা অর্থদন্ডে দন্ডি করা যায়।

বর্তমানে বাংলাদেশ আবুল খায়ের টোব্যাকো লিমিটেড, বৃটিশ টোব্যাকো, আকিজ টোব্যাকোসহ বিভিন্ন নামীদামী কোম্পানীর পাশাপাশি সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে নানা ধরনের নানা নামে সিগারেট বের করে তা গ্রামের বিভিন্ন হাট বাজার গুলো কম দামে বিক্রি করছে।

তার মধ্যে বাঁশখালী উপজেলায় এ ধরনের বেশ কিছু অখ্যাত কোম্পানী তাদের নিম্নমানের সিগারেট অবাদে বিক্রি করে যাচ্ছে। তাছাড়া তারা সরকারকে রাজস্ব দেওয়া সিগারেট কোম্পানীর গুলোর গায়ে লাগানো রাজস্বের স্টিকার গুলো পান দোকানদার এবং সিগারেটের দোকানদারের কাছ থেকে প্রতি কেজি দেড় থেকে ২ হাজার টাকা দামে কিনে নিয়ে সাধারণ জনগণকে ধোকা দেওয়ার স্বার্থে এগুলো পুনরায় তাদের নিম্নমানের সিগারেটের গায়ে লাগিয়ে দিচ্ছে।

উল্লেখ্য ওই সব সিগারেট সরকারের ছাড়পত্র বিহীন হওয়ায় ওই সিগারেটে নিম্নমানের নিকোটিন ব্যবহার করা হচ্ছে। যার ফলে সাধারণ জনগণ ওই সিগারেট পান করে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছে। স্থানীয় দোকানদার ও সচেতন নাগরিকের দাবী অবৈধ সিগারেট কোম্পানীকে গুলোকে অভিযানের মাধ্যমে অচিরেই বন্ধ করে দেয়া সহ সরকারী রাজস্ব নিশ্চিত করার জন্য সাধারণ জনগণ ও প্রশাসনের আহবান জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে আবুল খায়ের টোব্যাকো লিঃ বাঁশখালীতে দায়িত্বরত ডিএমও শহীদ সরওয়ার বলেন, সরকার অবৈধ কোম্পানী গুলোর কারণে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে। এগুলো সুষ্ঠ তদারকি না হলে একদিকে রাজস্ব বঞ্চিত হবে সরকার, অপরদিকে নানা ভাবে রোগাক্রান্ত হয়ে পড়বে ধূমপায়ীরা।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.