ভরা মৌসুমে নেই অতিথি পাখির দেখা

0

মো: সাইফুল উদ্দীন, রাঙামাটি::ভ্রমণের জন্য বরাবরের মতো শীত মৌসুমকেই বেছে নেয় মানুষ।মানুষের মতো অতিথি পাখিরাও যেন বেছে নেয় এই মৌসুমকে।তবে পর্যটন শহর রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদের কাট্টলী বিলে এ বছর অতিথি পাখিদের তেমন একটা দেখা নেই বলেই চলে। দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম কৃত্রিম হ্রদের কাট্টলী বিল শীতকালিন অতিথি পাখীদের অভায়শ্রম হিসেবে পরিচিত ছিলো। পর্যটকরা হ্রদের বুকে নৌ ভ্রমণে এলে পাখিদের দেখা পেতো সহজেই। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর পাখি তেমন একটা দেখা যাচ্ছে না। লংগদুর কাট্টলী বিলে একসময় দেশি-বিদেশি নানা জাতের পাখি আসতো। পাখিদের কলতানে মূখর ছিলো দশ কিলোমিটার প্রশস্ত এ বিল। হরহামেশাই দেখা মিলতো পানকৌড়ি, সরালি, শামুকভাঙ্গা, শামুকখোলা, বেগুনি কালেম, কানি বক, ধলা বক, রাঙা বক, বালি হাঁস, বৈদর, ডাহুক আরো কত শত পাখির।

শিকারীদের উৎপাত জেলেদের নৌকা আর অহরহ নৌযানের চলাচলই পাখিদের না আসার কারণ মনে করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কাট্টলী বিলের পূর্বপ্রান্তের ঘনমোড় গ্রামের বাসিন্দা আমির হোসেন জানালেন, আমি ত্রিশ বছরের অধিক সময় থেকে এ এলাকায় বসবাস করছি। আগের তুলনায় এ বছর পাখি নেই বললেই চলে। আগে বিলের মাঝে অনেক পাখি আসতো। বিলের পশ্চিম প্রান্তের লোকজন বিষটোপ দিয়ে পাখিদের ধরে ফেলছে। রাতের আঁধারে লাইট দিয়ে শিকার করছে পাখিদের। এমন সব কারণেই পাখিরা এখন আর আসছে না।

কাট্টলী বাজারের এক ব্যবসায়ী বলেন, হঠাৎ করে এ বছর পাখিদের আনাগোনা কম দেখা যাচ্ছে। হয়তো আরো কিছুদিন সময় লাগতে পারে পাখিদের আসতে। শিকারিদের উৎপাত কমাতে হবে। প্রায় সময় শিকারীদের পাখি ধরে বাজারে বিক্রি করতে দেখা যায়।

তবে পাখিদের আনাগোনা বাড়াতে এ বিলে নিরাপদ আশ্রয় নিশ্চিত করতে হবে। বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২ অনুযায়ী, পরিযায়ী পাখি হত্যার দায়ে একজন অপরাধীকে সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদন্ড অথবা সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত করার বিধান রয়েছে। একইভাবে কোনও ব্যক্তি যদি পরিযায়ী পাখির মাংস, দেহের অংশ সংগ্রহ করেন, দখলে রাখেন কিংবা ক্রয়-বিক্রয় করেন বা পরিবহন করেন, সে ক্ষেত্রে তাঁর সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদন্ড এবং সর্বোচ্চ ৩০ হাজার টাকা অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হওয়ার আইন প্রচলিত আছে ।

খাবারের খোঁজে সুদূর সাইবেরিয়া থেকে আসা এসব অতিথি পাখিদের এমন নির্বিচারে শিকার বন্ধ করতে আইনের প্রয়োগ জরুরি এমনটাই মনে করছেন এলাকার পরিবেশবাদী সচেতন মহল। তাঁরা বলেন, আমাদের নেতিবাচক আচরণে পাখিরা যেন বিলটিকে কোনভাবেই অনিরাপদ মনে না করে, সেদিকে আমাদেরই লক্ষ রাখতে হবে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.