স্যার আমার মেয়েকে বাঁচান!

0

এম বেলাল উদ্দিন, রাউজান,সিটিনিউজ : তখন বেলা ১টা ৪০ মিনিট, হাউমাউ করে কেঁদে বলে উঠল স্যার আমার মেয়েকে বাচাঁন,স্যার আমার মেয়েকে বাঁচান। গতকাল মঙ্গলবার চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীম হোসেন রেজার কার্য্যালয়ের এই দৃশ্য চোখে পড়ে। এই বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন রাউজান ফেসবুক আইডি থেকে লেখা হয়েছে এমন ত হতে পারে না!। জানাগেছে, উপজেলার পূর্বগুজরা ইউনিয়নের ৮নম্বর ওয়ার্ডস্থ বড় ঠাকুড় পাড়া এলাকার মাদাকাসক্ত ফজুর আলী প্রকাশ ফজু মিয়ার স্ত্রী শাহনাজ আকতার ও তার মেয়ে পূর্ব গুজরা উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী প্রিয়া আকতারের আকুতি স্যার আমাদেরকে বাঁচান।

তাৎক্ষনিক উপজেলা নির্বাহী অফিসার ঘটনা জানতে চাইলে ফজুর আলীর স্ত্রী শাহনাজ নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানান স্যার প্রতিদিন আমার স্বামী মদপান করার কারনে পারিবারিক অশান্তি লেগেই রয়েছে। এরমধ্যে আমার ১৩ বছর বয়সী সপ্তম শ্রেণীর মেধামী ছাত্রী প্রিয়া আকতারকে তার বাবা একই এলাকার রমজান আলী মাস্টার বাড়ীর লম্পট ৩ সন্তানের জনক ৪৫ বছর বয়সী প্রবাসী বাচা মিয়ার সাথে বিবাহের দিনক্ষন ঠিক করে ফেলেছে। তখন উপজেলা নির্বাহী অফিসার কবে বিবাহ জানতে চাইলে আজ মঙ্গলবার রাতেই বিবাহ হয়ে যাবে জানতে পেরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার দ্রুত স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মুক্তিযুদ্ধা আব্বাস উদ্দিনকে বিষয়টি ফোনে অবহিত করেন।

এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীম হোসেন রেজা বিকাল ৪টা নাগাদ লম্পট মাদকসেবী বাচা মিয়ার ঘরে অভিযান পরিচালনা করেন।নির্বাহী অফিসার যাওয়ার আগেই প্রিয়ার পিতা ফজর আলী ও বর পালিয়ে যায়। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এলাকার মানুষকে সাথে নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে বাল্য বিবাহটি বন্ধ করান । এদিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাৎক্ষনিকভাবে এই বাল্যবিবাহটি বন্ধ করেদিয়ে মেধাবী ছাত্রী প্রিয়া আকতারের লেখাপড়ার দায়ীত্ব নেন নিজেই।

এদিকে গতকাল সন্ধ্যা ৬টায় মুঠোফোনে রাউজান উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম হোসেন রেজা জানান প্রিয়া আকতারকে তার মাদকাসক্ত বাবা জোর পূর্বক এক মাদক ব্যবসায়ীর সাথে (আজ মঙ্গলবার) রাতে বাল্য বিবাহ দেওয়ার আয়োজন করেছিল। মেয়েটিকে নিয়ে তার মা আমার কার্য্যালয়ে চলে আসে। মেয়েটি বেশ মেধাবী,সে লেখাপড়া করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হয়ে দেশের সেবা করতে চাই।

তাই আমি কিশোরীকে তার মাদকাসক্ত বাবা এবং মাদক ব্যবসায়ী পাত্রের নির্মম নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা করে তার পড়াশুনার যাবতীয় দায়ীত্ব গ্রহণ করলাম। মাদক,ইয়াবা,বাল্য বিবাহ,দুর্নীতি ,ভেজাল খাদ্য সহ সমস্ত অনিয়মের বিরুদ্ধে সোচ্চার আগে থেকে আলোচিত এই উপজেলা নির্বাহী অফিসারের গতকালের বাল্য বিবাহটি বন্ধ করে ও কিশোরী মেয়েটির লেখাপড়ার ভার বহন করায় আবারো তার নামটি আলোচনায় উঠে আসল।

এদিকে একের পর এক অন্যায়ের বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযানে খুব প্রশংসীত সকল মহলের কাছে কাজের বিশ্বাসী এই নির্বাহী অফিসার। গত কয়েক মাস আগে পুকুড়ে ডুবে অসংখ্য কম বয়সী ছেলে মেয়ে মারা যাওয়ার ঘটনা রাউজানে যখন বেড়ে চলছে তখন তিনি স্ব উদ্যোগে সাঁতার শেখার প্রক্রিয়া চালু করেন রাউজান সদরে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.