সিটি নিউজ ডেস্ক: ৫ ফেব্রুয়ারি। ৩৬ বসন্ত পার করে ৩৭-এ পা দিলেন বর্তমান সময় তো বটেই বিশ্বের সর্বকালের অন্যতম সেরা ফুটবলার ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। অভাব-অনটনকে সঙ্গী করে পর্তুগালের মাদেইরাতে, ১৯৮৫ সালে যে শিশুর জন্ম, সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে প্রচণ্ড শ্রম আর নিয়মানুবর্তিতায় প্রতিষ্ঠা করেছেন নিজেকে। ফুটবলের এই সুপারস্টারকে নিয়েই এবারের প্রতিবেদন-
মালির ছেলের পায়ে যখন বিশ্ব শাসন। যখন ক্ষিপ্র গতি, ড্রিবলিং আর চোখ ধাঁধানো ফিনিশিংয়ে ধূলিসাৎ প্রতিপক্ষের অহম। লিসবন-ম্যানচেস্টার, মাদ্রিদ হয়ে ফ্যাসাকে তুরিনো। কোথায় ওড়াননি তার জয়ের ঝাণ্ডা। গল্পটা পাঁচবারের বিশ্বসেরার, গল্পটা রেকর্ডের বরপুত্রের। গল্পটা একজন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো দস সান্তোস আলভেইরোর।
সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তার বয়স বাড়ছে ঠিকই, কিন্তু গায়ে এখনো লেগে কৈশোরের গন্ধ। জেতার ক্ষুধা। ভুলে যাননি ভুলে যাওয়ার শৈশবকে। পড়াশোনায় মন ছিল না একদমই। ছোট্ট এক রুমে চার ভাইবোনের মধ্যে সবার ছোট্ট ছেলেটা, গুটিসুটি হয়ে ঘুমাতো ফুটবলকে আঁকড়ে ধরে। স্বপ্ন দেখার সেই তো শুরু।
অভাবের সংসারে বয়সটা দশের গণ্ডি পার হওয়ার আগেই কাজ নেন পাড়ার দল অ্যান্ডেরিনহার কিটম্যান হিসেবে। ফুটবলের হাতেখড়িটাও সেখানেই। পরে নজর কাড়ে স্পোর্টিং সিপির। ফার্গির হাত ধরেই তারকা বনে যাওয়া কিংবা রিয়াল মাদ্রিদের সর্বকালের সর্বসেরা ফুটবলারের তকমা। এসব গল্প বলা হয়েছে বহুবারই। জন্মদিনে না হয় শোনানো যাক এক অচেনা রোনালদোর গল্প।
ছেলেবেলা থেকেই কিছুতেই হারতে চাইতেন না ক্রিস্টিয়ানো। স্কোর না করতে পারলে কেঁদেকেটে ভাসাতেন বুক। তাইতো তার নাম হয়েছিলো ‘CRY BABY’ বা ছিঁচকাঁদুনে। পাড়ার বন্ধুরা এখনও তাকে ডাকেন ওই নামেই। বাবা ছিলেন মদ্যপ, ফলে সংসারে লেগে ছিল অশান্তি। অর্থকষ্টে ধুঁকে ধুঁকে চিকিৎসার অভাবে মরতে দেখেছেন বাবাকে। সেই থেকে অ্যালকোহল ছুঁয়ে দেখেননি রোনালদো। নিয়মিত রক্ত দেন তাই শরীরে নেই কোনো উল্কি।
মাঠে ক্রিস্টিয়ানো যতটা ক্ষুরধার বাবা হিসেবে যেন ভিন্ন অবয়ব। জুনিয়র রোনালদো, মারিয়া, মার্টিনা, মাত্তেও অবসরের পুরোটা কাটে প্রিয় ৪ সন্তানদের সঙ্গে। হরর সিনেমা তার পছন্দ, অবসরে ভালোবাসেন সপরিবারে ঘুরে বেড়াতে। ডজন খানেকের বেশি গার্লফ্রেন্ড পাল্টে এবার থিতু হচ্ছেন জর্জিনা রদ্রিগেজের প্রেমে।
ব্যক্তিগত, জাতীয় দল কিংবা ক্লাব ফুটবল। রোনালদোর রেকর্ডের গল্পে ভরে যাবে পরিসংখ্যানের পাতা। স্বীকৃত সবচেয়ে বেশি গোলের মালিকের পর এবার তার সামনে শুধুই আলী দাইয়ের রেকর্ড।
ক্রিস্টিয়ানো বিখ্যাত তার গ্রিক দেবতাদের মতো শারীরিক গঠনের জন্য। তবে এর পেছনে রয়েছে তার কঠোর শ্রম আর নিয়মানুবর্তিতা। তাইতো ৩৭ বছর বয়সেও রোনালদো যেন এক অনুপ্রেরণার নাম। গোলার গতিতে ছুটতে থাকা এই নক্ষত্র, আরও বহুকাল ছড়িয়ে যাক তার জ্যোতি। জন্মদিনে আপাতত কামনা হোক এটাই।
সিটি নিউজ/জিএস