তড়িৎ পদক্ষেপে রক্ষা পেল বাঁশখালীর কদমরসুলের বেড়িবাঁধের ভাঙ্গন

0

বাঁশখালী প্রতিনিধিঃ বাঁশখালীর উপকুলীয় খানখানাবাদের কদমরসুল পয়েন্টের ভাঙ্গন অবশেষে রোধ হলো স্থানীয় সাংসদের তড়িৎ পদক্ষেপের ফলে । তবে স্থানীয় জনগন বাঁশখালীর অপরাপর এলাকার মত স্থায়ী বাঁধ নির্মানে জোর দাবী জানান। প্রতিনিয়ত জোযারের টেউ আছড়ে পড়ে মাটির বাঁেধ আর তাতে তিল তিল করে ভেঙ্গে পড়ে ঝুঁকিপুর্ন হয়ে উঠে।

এ ভাঙ্গন রোধ করা না গেলে এলাকার কয়েকহাজার বাড়িঘর ও ফসলী জমি হুমকির মধ্যে পড়ত । যার জন্য কদমরসুল এলাকার সাধারন জনগন শংকিত ছিল। খানখানাবাদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ বদরুদ্দিন চৌধুরী এ খবর দ্রুত জানালেন সাংসদ আলহাজ্ব মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী কে। তিনি যে কোন কিছুর বিনিময়ে বেড়িবাঁধ রক্ষায় কাজ করার জন্য পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও পানি উন্নয়ন বোর্ড়ের কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করেন। তাতে রক্ষায় হলো বাঁশখালী বাসীর দীর্ঘদিনের প্রতিক্ষীত বাঁধের ভাঙ্গন।

সরজমিনে বেড়িবাঁেধর ভাঙ্গনস্থল পরিদর্শন কালে দেখা যায় অর্ধশতাধিক শ্রমিক কাজ চালিয়ে যাচ্ছে । তবে স্থানীয় জনগন বাঁশখালীর অপর স্থায়ী রেড়িবাধেঁর সাথে এটাও স্থায়ী করতে সাংসদ ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবী জানান।

কদমরসুল এলাকার মোহাম্মদ শোয়াইব জানান ভাঙ্গনটি রক্ষা করা না গেলে জনগনের প্রচুর ক্ষতি হতো । জনগনের কথা বিবেচনা করে সাংসদ আলহাজ্ব মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর দ্রুত পদক্ষেপের ফলে ভাঙ্গনটি রোধ হয়েছে রক্ষা পেয়েছে এলাকার জনগন । একই কথা বললেন এলাকার সচেতন নাগরিক জিয়াউল হক চৌধুরী । তিনি বলেন যা কাজ করা হয়েছে তাতে পানি প্রবেশ রোধ হবে । আগামীতে দ্রুত স্থায়ী বাধঁ নির্মান করতে হবে না হয় আবারো ভাঙ্গনের কবলে পড়বে ।

বাঁশখালীর জনগনের দীর্ঘদিনের দাবীর প্রেক্ষিতে উপকুলীয় বেড়িবাঁধ স্থায়ীভাবে নির্মান করার জন্য স্থানীয় সাংসদ আলহাজ্ব মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর ঐকান্তি প্রচেষ্টায় এ কাজে পাউবো ২০১৩ সালে বাঁধের নকশা চুড়ান্ত হওয়ার পর প্রাথমিকভাবে ২০৯ কোটি টাকা বরাদ্দ নির্ধারণ করা হয়। পরে নির্মাণ সামগ্রী দাম বাড়া ও ঠিকাদারদের আপত্তির মুখে ২০১৫ সালে বাঁধ নির্মাণে ২৫১ কোটি ২৯ লক্ষ ৮৬ হাজার টাকার অনুমোদন দেয় সরকার।

একদিকে পাউবো কর্মকর্তাদের শহরে বসে তদারকি অন্য দিকে রাজনৈতিক ও জনপ্রতিনিধিদের সাব ঠিকাদারী নিয়ে কাজে অনিয়মের ফলে নিদিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করা সম্ভব না হওয়ায় হতাশায় ভোগে উপকুলীয় জনগন।

২০১৫ সালের ১ মে থেকে ২০১৮ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত প্রকল্প বাস্তবায়ন কাল ধরা হলেও তা দুই মেয়াদে সময় বৃদ্ধি করা হয়। চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি বাঁশখালীর উপকুলীয় ছনুয়া এলকার বেড়িবাধেঁর কাজ পরিদর্শন কালে এ বছরের জুনের মধ্যে কাজ শেষ হবে বলে ঘোষনা দিয়েছিলেন পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্ণেল (অব:) জাহিদ ফারুক এমপি । কিন্ত কাজ এগিয়ে নেওয়া না যাওয়াতে বঙ্গোপসাগরের জোয়ারের তোড়ে ভাঙ্গছে ছনুয়ার খুদুকখালীসহ বিভিন্ন পয়েন্টে আর খানখানাবাদের কদমরসুল হাছিয়াপাড়া এলাকায় ।

বাঁশখালী উপজেলার পোল্ডার নং-৬৪/১এ, ৬৪/১বি এবং ৬৪/১সি এর সমন্বয়ে ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়ার পর প্রকল্পে ঢাল সংরক্ষণসহ বাঁধ নির্মাণ ৯.৯০০ কিলোমিটার, নদী তীর সংরক্ষণ কাজ ৩.৮৪৮ কিলোমিটার, বাঁধ পুনরাকৃতিকরণ ২ কিলোমিটার। ৩৪ প্যাকেজে কাজ শুরু করে ঠিকাদার। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে হাছান এন্ড ব্রাদার্স ২০টি প্যাকেজ, মেসার্স মশিউর রহমান আটটি প্যাকেজ, মেসার্স আরাধনা এন্টারপ্রাইজ দুটি প্যাকেজ, মোস্তফা এন্ডসন্স দুটি প্যাকেজ, নিয়াজ ট্রেডার্স একটি প্যাকেজ, আলম এন্ড ব্রাদার্স একটি প্যাকেজের কার্যাদেশ পেয়েছে।

এসব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অধীনে খানখানাবাদে চার হাজার ৫০০ মিটার, ছনুয়ায় তিন হাজার ২০০ মিটার, সাধনপুরে দুই হাজার ৭৯ মিটার, পুকুরিয়ায় এক হাজার ২৬৯ মিটার, গন্ডামারায় ৯০০ মিটার কাজ শুর” হয়। প্রকল্পের আওতায় ঢাল সংরক্ষণসহ বাঁধ নির্মাণ এবং নদী তীর সংরক্ষণের মাধ্যমে ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, বন্যা, সমুদ্রের লোনা পানির প্রবেশ রোধ এবং নদী ভাঙন রোধ করতে প্রকল্পটি গ্রহন করা হয়।

খানখানাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ বদরুদ্দিন চৌধুরী জানান বর্তমানে জোয়ারের তোড়ে খানখানাবাদের কদমরসুল পয়েন্টে ভাঙ্গন শুরু হলে সাংসদ আলহাজ্ব মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর তড়িৎ পদক্ষেপে তা রোধে ১৬৫০টি বালির বস্তা ফেলা হবে। আশা রাখি ভাঙ্গনটা রোধ হবে অচিরেই তাতে স্থায়ী রাঁধ নির্মানে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য পাউবো কর্তৃপক্ষ পরিদর্শন এবং পরিমাপ করে গেছে বলে তিনি জানান ।

পাউবোর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী প্রমশন চাকমা জানান বাঁশখালীর উপকুলীয় বাঁধের কদমরসুল এলাকায় ভাঙ্গন এলাকায় প্রায় ২২শত জিও ব্যাগ দেওয়া হচ্ছে। জররী মুহুর্তে এ কাজ ছাড়া অন্য কিছু করার উপায় নেই বলে তিনি স্থায়ী বাঁধ নির্মানে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানান ।

বাঁশখালীর সাংসদ আলহাজ্ব মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন উপকুলীয় জনগনকে রক্ষা করতে সাড়ে তিনশত কোটি টাকা বরাদ্দ আনা হয়েছে । এবং পর্যায়ক্রমে তা বৃদ্ধি করে এখন প্রায় চারশ, সাড়ে চারশ কোটির কাজ বাঁশখালী উপকুলে বিভিন্ন প্রকল্পে চলমান । যার ফলে বিগত দিনের কয়েকটা দুর্যোগে কোন পানি উপকুলে প্রবেশ করতে পারেনি। দুয়েক জায়গায় যে সমস্যা রয়েছে তা অচিরেই স্থায়ী বাঁধ করে বাঁশখালীবাসী নিরাপদে রাখব এটা আমার অঙ্গীকার বলে তিনি জানান।

এ বিভাগের আরও খবর
আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.