যুক্তরাষ্ট্রে ঘূর্ণিঝড় হেলেনের আঘাতে নিহত অন্তত ১২৮

0

যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় হেলেনের তাণ্ডবে অন্তত ১২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। শুধু নর্থ ক্যারোলাইনা অঙ্গরাজ্যের বানকম্ব কাউন্টিতেই অন্তত ৫৬ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন বহু মানুষ।

হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কর্মকর্তারা। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএসের বরাতে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এই তথ্য জানিয়েছে।

সিএনএনের খবরে বলা হয়েছে, জর্জিয়া, ফ্লোরিডা, টেনেসি ও ভার্জিনিয়ার মতো জায়গায় অনেক মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে টানা ভারি বৃষ্টিতে ফ্লোরিডা থেকে ভার্জিনিয়া পর্যন্ত সবগুলো রাজ্যে বন্যা দেখা দিয়েছে। বন্যায় বহু রাস্তা ও সেতু ধ্বংস হয়েছে। ওই অঞ্চলগুলোর লাখ লাখ বাসিন্দা বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছেন।

 

যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ওই রাজ্যগুলো ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে ও আবর্জনা পরিষ্কার করতে বড় ধরনের উদ্যোগ নিয়ে কাজ শুরু করেছে প্রশাসনের সংশ্লিষ্টরা।

এএফপির খবরে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় হতাহতদের সন্ধানে এখনও কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা।

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কমলা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্প হেলেনের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনের ঘোষণা দিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় জরুরি ব্যবস্থাপনা সংস্থার প্রশাসক ডীন ক্রিসওয়েল বলেন, আমরা পানি সরবরাহ ব্যবস্থাপনা অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পেয়েছি। এছাড়া যোগাযোগ ব্যবস্থা, রাস্তাঘাট, জরুরি পরিবহণ রুটগুলোসহ অনেক বাড়িঘর ধ্বংসের খবরও পাচ্ছি।

নর্থ ক্যারোলাইনার পশ্চিমাঞ্চলে এখনও বন্যার সতর্কতা জারি রয়েছে। সেখানে থাকা একটি বাঁধ ভেঙে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানা গেছে।

মঙ্গলবারের পরে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় আবহাওয়া বিভাগের পরিচালক ক্যান গ্রাহাম। রোববারও প্রায় ২২ লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় দিন কাটিয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির একটি বিদ্যুৎ পর্যবেক্ষণ সংস্থা। এ ছাড়া আমেরিকান রেডক্রস পরিচালিত আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছে হাজার হাজার লোক।

ইন্স্যুরেন্স ও আবহাওয়ার পূর্বাভাসদানকারীরা জানিয়েছেন, সামগ্রিক ক্ষয়ক্ষতির আর্থিক মূল্য দেড় হাজার কোটি ডলার থেকে ১০ হাজার কোটি ডলারেরও বেশি হতে পারে।

নর্থ ক্যারোলইনার গভর্নর রয় কুপার সিএনএনকে বলেন, এটি একটি ধ্বংসাত্মক বিপর্যয়। আমি নর্থ ক্যারোলাইনার পশ্চিমাঞ্চলের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা জানিয়েছেন, তারা এমনকিছু এর আগে কখনও দেখেননি।

কুপার জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সরকার ও ১৯ রাজ্যের তল্লাশি ও উদ্ধারকারী দল সেখানে গিয়েছে। কিছু রাস্তা মেরামত করতে কয়েক মাস লেগে যাবে। যুক্তরাষ্ট্রে আঘাত হানা হারিকেনগুলোর মধ্যে শক্তির বিবেচনায় হেলেন ১৪ তম। এই ঘূর্ণিঝড়ের কারণে স্থলভাগেই ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৪২০ মাইল পর্যন্ত গতিতে বাতাস বয়ে গেছে।

এর আগে ২০১৭ সালে হারিকেন আইডা এবং ১৯৯৬ সালে হারিকেন ওপালের সময় ঘণ্টায় ৪৬০ মাইল গতিতে বাতাস বইতে দেখা যায়।

এ বিভাগের আরও খবর
আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.