সার্কিট হাউসের আঙ্গিনা থেকে শিশু পার্ক নামক জঞ্জাল অপসারণ দাবী

0

সিটি নিউজঃ চট্টগ্রাম পুরানো সার্কিট হাউসের আঙ্গিনা থেকে শিশু পার্ক নামক জঞ্জাল অপসারণের দাবীতে এক মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করা হয়।

আজ মঙ্গলবার (৮ই সেপ্টেম্বর) সকালে নাগরিক উদ্যোগ আয়োজিত এক মানববন্ধন সংগঠনের কো-চেয়ারম্যান হাজী মোহাম্মদ ইলিয়াছের সভাপতিত্বে এবং সমন্বয়কারী মোরশেদ আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে ছাত্র-যুবক-রাজনীতিক-সামাজিক-কবি-শিল্পী সাহিত্যিক সহ বিভিন্ন পেশার নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হয়ে দাবীর প্রতি তাদের স্বত:স্ফুর্ত সমর্থন জানিয়ে বক্তব্য রাখেন।

এসময় রাজনীতিবিদ সাইদুর চৌধুরী বলেন, এই পার্ক রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ দুটি স্থাপনার জন্য হুমকি। পার্কে ঢুকে দুর্বৃত্তরা সার্কিট হাউস ও পাঁচ তারকা হোটেল রেডিসন ব্লু লক্ষ্য করে নাশকতা ঘটাতে পারে।

রাজনীতিবিদ শফিউল আজম বাহার বলেন, এ সার্কিট হাউসটি কেবল বাংলাদেশের অনন্য ঐতিহ্য নয়, এটি দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার অত্যাধুনিক স্থাপত্য। আর এর সামনে খোলা সবুজ চত্বরটি ছিল সেই ঐতিহ্যের অংশ। দেশে প্রথমবারের মত চট্টগ্রামের মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা যখন সূচনা হয় তখন এই চত্বরে নির্মিত হয়েছিল বিজয় মঞ্চ। সেই মঞ্চে সারাদেশ থেকে আসা রনাঙ্গণের বীর মুক্তিযোদ্ধারা নতুন প্রজন্মের সামনে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতেন। এই মঞ্চেই চর্চা হতো মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস।

রাজনীতিবিদ আবুল হাসনাত বেলাল বলেন, ১৯৯১ সালে বেগম জিয়ার বিএনপি যখন জামায়াতের সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় আসে, এই বিজয় মেলার কার্যক্রম তাদের গাত্রদাহ হচ্ছিল। স্বাধীনতা বিরোধী জামাত চক্রের ইন্ধনে বিএনপি’র তৎকালীন মেয়র মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন বিজয় মঞ্চের আলোচনা বন্ধ করার মানষে শিশুপার্ক নামের জঞ্জালটি সৃষ্টি করে।

নাগরিক উদ্যোগের সদস্য সচিব হাজী মো. হোসেন বলেন, সম্প্রতি চুক্তির ২৫ বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর পরিবেশবাদীসহ চট্টগ্রামের নাগরিকরা সবাই আবেদন করেছিলেন এই চুক্তি যেন আর বাড়ানো না হয়। কিন্তু কারো মতামতের তোয়াক্কা না করে আবারও মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। আগে শিশুপার্ক ঘিরে লোহার গ্রিল ছিল। এখন দেয়া হয়েছে অন্ধকারচ্ছন্ন সীমানা প্রাচীর। এজন্য দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার শ্রেষ্ঠ স্থাপত্য পুরাতন সার্কিট হাউস বাইরে থেকে আর দেখার সুযোগ নাই।

বক্তারা চসিকের নব নিযুক্ত প্রশাসক আলহাজ্ব মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজনের দৃষ্টি আকর্ষন করে বলেন, আপনি ব্যক্তিগতভাবে জানেন মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা মঞ্চের আলোচনা বন্ধ করার জন্য শিশু পার্ক নামক এই জঞ্জাল বানিয়েছিলো বিএনপি। এই জঞ্জাল সরিয়ে ফেলুন। অপ্রয়োজনীয় এই আত্মঘাতি চুক্তি বাতিল করুন। এটি এখন সময়ের দাবী। চট্টগ্রামবাসী আপনার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবে।

উল্লেখ্য, ১৯৯৪ সালের ২৮শে নভেম্বর থেকে সু-বিশাল চত্বরটি ২৫ বছরের জন্য ইজারা দেয়া হয়েছিল ভায়া মিডিয়া সার্ভিসেস নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে। গত বছরের ২৭ শে নভেম্বর এই ইজারার মেয়াদ শেষ হয়। দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রামের বিভিন্ন মহল থেকে দাবী তোলা হয়েছিল শিশুপার্কের ইজারা যেন আর বাড়ানো না হয়। আগের সবুজ উদ্যানটি যেন আবারও ফিরিয়ে আনা হয়। কিন্তু সম্প্রতি আবারো ১৫ বছরের জন্য একই প্রতিষ্ঠানের কাছে ৩ একর আয়তনের এই জায়গাটি নামমাত্র ভাড়ায় ইজারা নবায়ন করেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন।

মানববন্ধনে রাজনীতিক নাজিম উদ্দিন, হাজী শের আলী সওদাগর, আবদুর রহমান মিয়া, শেখ মামুনুর রশীদ, মোহাম্মদ সেলিম, সমির মহাজন লিটন, হাসান মো. মুরাদ, মোহাম্মদ শাহজাহান, জাইদুল ইসলাম দূর্লভ, হাসান মুরাদ, আলমগীর ফেরদৌস, সাইফুল্লাহ আনসারী, রকিবুল আলম সাজ্জি, সরওয়ার্দী এলিন, রাজিব হাসান রাজন, নগর ছাত্রলীগ সভাপতি ইমরান আহমদ ইমু, জাহাঙ্গীর আলম, ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী, মনিরুল হক মুন্না, সিরাজদ্দৌলা নিপু, মোহাম্মদ আবিদ, হাসান মুরাদ, মো. মিজানুর রহমান, সালাউদ্দিন জিকু প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।

এ বিভাগের আরও খবর
আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.